শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিককে ওই কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া থেকে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি কেনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনা করার খুব কম কারণ রয়েছে।
অবশ্য হাইপারসনিক মিসাইলে রাশিয়া এবং চীন থেকে পিছিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের চেষ্টায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করতে চাইছে।
মার্কিন কর্মকর্তা এও বলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির বিকাশ, পরীক্ষা এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক একটি সুবিধা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ওয়াশিংটনকে মস্কোর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র কেনার প্রস্তাব দেওয়ার বিষ্ময়কর তথ্য দেন। এ দিন একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেছিলাম, আপনি কী চান আমাদের হাইপারসনিক অস্ত্রশস্ত্র আপনার কাছে বিক্রি করি? আর এর মাধ্যমে আমরা সবকিছুর ভারসাম্য বজায় রাখবো। এছাড়া আমি তখনই এ কথা বলেছিলাম, যখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, নতুন রুশ অস্ত্র কীভাবে ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে’ ফিট থাকতে পারে?
তবে সংবাদমাধ্যম বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রস্তাব ‘প্রত্যাখ্যান’ করে বলেছিলেন, ‘আমরা শিগগির নিজেরা হাইপারসনিক অস্ত্র বানাবো।
পরে পুতিন এও বলেন, ঠিক আছে, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) পারবে এই অস্ত্র বানাতে। তবে কেন তারা এই অর্থ ব্যয় করবে, যেহেতু আমরা ইতোমধ্যে করেছি। আমাদের দু’দেশের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ভারসাম্য তৈরি করতে রাশিয়া এই ব্যয় করতেই পারে।
তবে সংবাদমাধ্যম এও বলছে, রুশ প্রেসিডেন্ট তার প্রস্তাবটি সম্পর্কে সিরিয়াস ছিলেন কি-না, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার নয়। এছাড়া এটি খুবই হাই-প্রোফাইল ট্রলের উদাহরণও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কেননা, মস্কো অন্য কারও মতো বিদেশে নিজেদের সর্বাধুনিক অস্ত্র বিক্রি করতে সবসময়ই অনীহা প্রকাশ করে। দেশটি রপ্তানির জন্য অস্ত্রের বিশেষ সংস্করণ তৈরি করে বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন>> ট্রাম্পকে রুশ হাইপারসনিক মিসাইল কেনার প্রস্তাব পুতিনের!
২০১৮ সালের মার্চে অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, আন্ডারওয়াটার ড্রোনসহ একগুচ্ছ নতুন অস্ত্র উন্মোচন করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এর মধ্যে তার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘কিনঝাল’। বিশ্বে সর্বপ্রথম সর্বাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়ে পুতিন জানিয়েছিলেন, হাইপারসনিক ক্ষেপাণাস্ত্র প্রতিযোগিতায় রাশিয়া অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ১৫ বছর এগিয়ে থাকবে। সেইসঙ্গে রাশিয়া এটি নিয়ে ১০টি অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে কিনঝালটি ‘তোপোলেভ টিইউ-২২২এম৩ বোমার’ বহন করে অত্যাধিক দূরগতির সঙ্গে।
এটির গতি শব্দের চেয়ে আটগুণ বেশি। যেখানে শব্দের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার। এ হিসেবে কিনঝাল এক সেকেন্ডে যেতে পারে দু্ই হাজার ৫৭৬ মিটার। অর্থাৎ এক সেকেন্ডে কিনঝাল পাড়ি দিতে সক্ষম প্রায় আড়াই কিলোমিটার। এমনকি ক্ষেপণাস্ত্রটি মুহূর্তেই গতি পাল্টিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে সক্ষম।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৯
টিএ