অবশেষে বেঁচে ফিরলেন ইউক্রেনের খারকিভ মেডিকেল ইনস্টিটিউটের এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী রোহান চৌধুরী।
বোনের বিয়েতে অংশ নিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার কথা ছিল রোহানের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোহান বলেন, ভারতীয় দূতাবাস থেকে কিছু পরামর্শ পাওয়া গিয়েছিল। আমরা সেগুলো ফলো করেছি। কারণ বাংলাদেশ এবং ভারতীয় দূতাবাস প্রায় একই ধরনের তথ্য সরবরাহ করে। ভারতীয় দূতাবাস বলেছে, যত ভারতীয় আছে তাদের ০২ মার্চ, রাত ৮টার ভেতর খারকিভ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
রোহান বলেন, খারকিভ ছাড়তে যেদিন রেলস্টেশনে যাই, ঠাণ্ডার মধ্যে আমাদের ১৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। এরপর আমরা একটা ট্রেন পেয়েছি। যেটা বর্ডারের পাশে নয়, শুধু খারকিভ ছেড়ে যাচ্ছিল। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমাদের সারা শরীর ব্যথা হয়ে গিয়েছিল, তবু সহ্য করতে হয়েছে। কারণ আমরা বাড়ি যেতে চাই।
তিনি বলেন, যখন লিভিভে পৌঁছাই সেখানেও ৫-৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ লিভিভ থেকে সীমান্তে যাওয়ার কোনো বাস নেই। পরে ভারতীয় দূতাবাস কিছু বাসের ব্যবস্থা করেছিল। আমরা কিছু টাকা দিয়ে সেই বাসে লিভিভ থেকে সীমান্তে আসি। চপ নামের ওই সীমান্তে পৌঁছাতেও ৫ ঘণ্টা লেগেছে।
তিনি আরো বলেন, যখন আমরা সীমান্তে আসি, তখন ইউক্রেনীয় রেডক্রসের একটি দল ছিল ওখানে। এরপর জাগোনি সীমান্ত দিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করি। ওখানে তারা আমাদের বাচ্চাদের মতো করে যত্ন নিয়েছে।
হাঙ্গেরিতে ঢুকে দেশটির রাজধানী বুদাপেস্টে চলে যান রোহান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি অস্ট্রিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা টিকেটের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আমরা এখানে আছি। তবে ইতোমধ্যে রোহানকে দেশে পাঠানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে রোহান বলেন, ভেবেছিলাম আমি খারকিভে থেকে যাবো। কিন্তু পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। আমি আসলে ভাগ্যবান। আমার আশপাশে ২-৩ বার বোমা হামলা হয়েছে। যদি ঘর থেকে ৫ মিনিট পরে বের হতাম তাহলে হয়তো বেঁচে থাকতাম না। আমি চিন্তা করিনি নিরাপদে ইউক্রেন ছাড়তে পারবো। এখন মনে হচ্ছে আমি স্বর্গে আছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২২
এনএসআর