ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

লিভ টুগেদার স্পষ্ট ব্যভিচার, স্বাভাবিক ভাবার সুযোগ নেই

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
লিভ টুগেদার স্পষ্ট ব্যভিচার, স্বাভাবিক ভাবার সুযোগ নেই

সব যুগেই তথাকথিত আধুনিকতার নামে সমাজে নতুন নতুন পাপের জন্ম হয়, যা ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ে এক জনপদ থেকে অন্য জনপদে। তেমনই একটি ভাইরাস হলো লিভ টুগেদার।

সহজভাবে বলতে গেলে লিভ টুগেদার বিয়ের আগে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড স্বামী-স্ত্রীর মতো একসঙ্গে থাকা বোঝায়।

সামাজিকভাবে চরম ঘৃণিত ও নিষিদ্ধ এই কাজটি এখন বাংলাদেশেও ব্যাপক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে পরিচয় গোপন করে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে কিছু যুগল এই জঘন্য কাজটি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে এটি স্পষ্ট জিনা (ব্যভিচার)। এই কাজকে সহজ ও স্বাভাবিক ভাবার কোনো সুযোগ নেই। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। ’ (সুরা : ইসরা/বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩২)

অনেকে ভাবতে পারে, কোনো ধরনের শারীরিক সম্পর্কে না জড়িয়ে একসঙ্গে থাকলে তা ব্যভিচারের পর্যায়ে পড়বে না বা গুনাহ হবে না। এটা ঠিক নয়। শয়তান কোনো না কোনোভাবে তাদের ব্যভিচারে লিপ্ত করবেই। শারীরিক সম্পর্কে কেউ না জড়ালেও অন্তত তারা একসঙ্গে থাকার দরুন, দেখা হবে, কথা হবে, আড্ডা হবে। এগুলোর মাঝেও রয়েছে ব্যভিচারের গুনাহ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘চোখের ব্যভিচার হলো (বেগানা নারীকে) দেখা, জিহ্বার ব্যভিচার হলো (তার সঙ্গে) কথা বলা (যৌন উদ্দীপ্ত কথা বলা)। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬২৪৩)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘দুই চোখের জিনা (বেগানা নারীর দিকে) তাকানো, কানের জিনা যৌন উদ্দীপ্ত কথা শোনা, মুখের জিনা আবেগ উদ্দীপ্ত কথা বলা, হাতের জিনা (বেগানা নারীকে খারাপ উদ্দেশ্যে) স্পর্শ করা আর পায়ের জিনা ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া এবং মনের জিনা হলো চাওয়া ও প্রত্যাশা করা। ’ (মেশকাত, হাদিস : ৮৬)

আর লিভ টুগেদারের মাধ্যমে এর প্রতিটি গুনাহই প্রতিনিয়ত সংঘটিত হয়। যার ফলে সমাজে নেমে আসে অশান্তি, দুর্যোগ আরো কত কী! কারো কারো এই পাপের কারণে গোটা সমাজকে এর আপদ বহন করতে হবে। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। ’ (সুরা :  রুম, আয়াত : ৪১)

তাই কারো দ্বারা এ ধরনের কাজ হয়ে গেলে তার উচিত, তাৎক্ষণিক আল্লাহর কাছে খাঁটি মনে তাওবা করে নেওয়া। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা।

অনেকে নিজে তো এই পাপগুলো করেই, আবার বিভিন্নভাবে এই জঘন্য পাপগুলো প্রমোট করার চেষ্টা করে, যা জঘন্য থেকে জঘন্য অপরাধ। যা তাদের দুনিয়া-আখিরাতের শাস্তির সম্মুখীন করবে বলে পবিত্র কোরআনে সতর্ক করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই জঘন্য গুনাহ থেকে হেফাজত করুন এবং আমাদের সমাজকে এই ঘৃণিত কাজ থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।