কোরআনের শিক্ষা মানুষের জন্য সহজ করে দেওয়া হয়েছে। কোরআনের সংস্পর্শে এসে মানুষ উন্নত ও সুখময় জীবনের সন্ধান পায়।
কোরআন বিশুদ্ধভাবে শেখা ও শেখানোকে উত্তমতার কুষ্ঠিপাথরে বিবেচনা করা হয়েছে। সাহারি হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়। ’ –সহিহ বোখারি
তাছাড়া নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হলো কোরআন তেলাওয়াত।
পবিত্র কোরআন মুসলমানদের অমূল্য রত্ন। মানবজাতির আলোকবার্তিকা। কোরআনের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত আয়ত্ব করা ও তার বিধান অনুসারে নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত সঠিকভাবে পালন করা প্রতিটি মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে। তারা এমন ব্যবসা আশা করে, যাতে কখনও লোকসান হবে না। ’ -সূরা ফাতির: ২৯
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন পাঠ কর। আল্লাহতায়ালা সেই অন্তরকে শাস্তি দেবেন না, যে অন্তর কোরআন ধারণ করেছে। কোরআন হলো আল্লাহতায়ালার দস্তরখান, যে ব্যক্তি তাতে প্রবেশ করলো সে নিরাপত্তা লাভ করলো এবং যে কোরআনকে প্রাধান্য দিলো তার জন্য রয়েছে সুসংবাদ। ’ -সুনানে দারেমি
কিন্তু যার মাঝে কোরআনের কোনো অংশ নেই অর্থাৎ যে কোরআন সম্পর্কে অজ্ঞ বা কোরআনের শুদ্ধ তেলাওয়াত শেখেনি, তাকে অনাবাদ পতিত ঘরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যে পতিত ভূমি বা বিরান ঘর কারও উপকারে আসে না বরং অন্যের বিপদ ও ক্ষতির কারণ হয়।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার মাঝে কোরআনের কোনো অংশ নেই, সে অনাবাদ ঘরের মতো। ’ তিরমিজি
বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত না করলে সওয়াবের পরিবর্তে গোনাহ হয়।
দুনিয়ায় মানুষ নিজের ও সন্তানের জীবন আলোকিত ও সাফল্যমণ্ডিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু কোরআন শিক্ষার বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে না। আসলে প্রকৃত সফলতা নিহিত রয়েছে কোরআনের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত ও প্রয়োজনীয় ইসলামি জ্ঞান অর্জনের মাঝে। এর দ্বারা জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি লাভ করাও সম্ভব।
এখন চলছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পরবর্তী অবসর সময়। এই অবসর সময়ে যারা শৈশবে কোরআন শিখতে পারেননি কিংবা শিখলেও নানা ব্যস্ততায় কোরআন না পড়তে পড়তে ভুলে গেছেন। এই পরীক্ষা পরবর্তী অবসর সময়ে ইচ্ছা করলে কোরআন শেখার কাজটি সম্পন্ন করে নিতে পারেন।
এ সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ কোরআন শিক্ষার বেশকিছু কোর্স পরিচালিত হয়। কোর্সে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা নুরানী পদ্ধতিতে কোরআনের বিশুদ্ধ তেলাওয়াত, দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় দোয়া ও মাসয়ালা-মাসায়েল সঠিকভাবে শেখানো হয়।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে এমন কোনো গ্রাম নেই, যেখানে একজন কারি, হাফেজ, মাওলানা বা একজন ভালো মানের আলেম পাওয়া যাবে না। তারপরও এ দেশে এমন প্রচুর মানুষ রয়েছে, যারা কালেমা সহিহ-শুদ্ধভাবে উচ্চরণ করতে পারে না। সঠিক পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে পারে না। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তাই আসুন, এখনও যারা কোরআন শিখতে পারেননি, লোকলজ্জাকে উপেক্ষা করে কোরআন শিখতে উদ্যোগী হই। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
এমএইউ/