বস্তুত ধর্মীয় বিশ্বাস, নৈতিকতা ও সামাজিক বিষয়াদি সম্পর্কে হজরত লুকমান (আ.) নিজ সন্তানের প্রতি যেসব উপদেশ দিয়েছেন এই আয়াতে সেসবের কিছুই আলোচনা হয়েছে। এই আয়াতে আল্লাহতায়ালাকে চেনার উপায় নিয়ে বলা হয়েছে।
আয়াতে বলা হচ্ছে, আল্লাহতায়ালা আকাশ ও ভূমি সৃষ্টি করে এর মধ্যবর্তী সবকিছু এমনভাবে বিন্যস্ত করেছেন যাতে সেগুলো সব সময় মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে। আকাশে চন্দ্র ও সূর্যের উপস্থিতি এবং নিজ অক্ষের ওপর ও সূর্যের কক্ষপথে পৃথিবীর ঘুর্ণনের ফলে ভূপৃষ্ঠে মানুষের বসবাস উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সাগর-মহাসাগর, ভূপৃষ্ঠে ও ভূগর্ভের নানা প্রকার খনিজ সম্পদ, জল ও স্থলের নানা জীবজন্তু ও প্রাণী, গাছপালা ও কৃষিপণ্য ইত্যাদি সবই আল্লাহতায়ালা মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে দিয়েছেন।
এসবের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ তিনি মানুষের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন এবং বাকি সব কিছুই মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে তিনি নিজেই পরিচালনা করছেন।
আসলে আল্লাহতায়ালা শুধু মানুষের বস্তুগত চাহিদাই পূরণ করেননি, সেইসঙ্গে তার আত্মিক চাহিদা পূরণ এবং চলার পথের দিশা দিতে যুগে যুগে পাঠিয়েছেন বহু নবী ও রাসূল। মানুষ যাতে দিকহারা হয়ে না যায় এবং আত্মিক দিক দিয়ে পূর্ণতায় পৌঁছাতে পারে সে ব্যবস্থা করেছেন দয়ালু আল্লাহ।
কিন্তু সব যুগে সব সময়ে এমন কিছু মানুষ ছিল এবং আছে যারা আল্লাহর এসব নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে তার সম্পর্কে অযথা তর্কে লিপ্ত হয়। এসব মানুষের কোনো যুক্তি না থাকা সত্ত্বেও তারা গায়ের জোরে ঈমানদারদের সঙ্গে তর্ক করে।
বর্ণিত আয়াতের শিক্ষণীয় দিকগুলো হলো-
ক. এই বিশ্বজগতের মূল আকর্ষণ হচ্ছে- মানুষ। আকাশ ও জমিনের বাকি সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষেরই কল্যাণে।
খ. মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত যেমন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে তেমনি তার বৈচিত্রও অনেক। এরপরও আল্লাহর প্রতি মানুষের অকৃতজ্ঞতা কাম্য নয়।
গ. আমাদের উচিত জ্ঞান-বুদ্ধি ও যুক্তিনির্ভর আলোচনা করা। অথবা আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবের শিক্ষাকে দলিল হিসেবে তুলে ধরেও আলোচনা হতে পারে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এমএইউ/