প্রথম প্রকার: ইবাদত মূলতঃ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যই করা হ। যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ এবং মানুষের প্রশংসা পাওয়ার উদ্দেশ্য ‘নামাজ’ আদায় করা।
দ্বিতীয় প্রকার: ইবাদত করার মধ্যবর্তী অবস্থায় রিয়ায় পতিত হওয়া। অর্থাৎ যেমন ইবাদত শুরুর সময় একনিষ্ঠভাবে আরম্ভ করে কিন্তু ইবাদতের মধ্যবর্তী সময়ে রিয়া সৃষ্টি হয়। এ ধরনের ইবাদত দু’অবস্থা হতে খালি নয়।
ক. যদি ওই ইবাদতের প্রথমাংশ শেষাংশের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকে তাহলে প্রথমাংশ শুদ্ধ হবে এবং দ্বিতীয় অংশ বাতিল হবে। এর উদাহরণ হলো- যেমন কোনো ব্যক্তি একশ’ টাকা দান করার ইচ্ছা পোষণ করল। এর মধ্যে পঞ্চাশ টাকা দান করল একনিষ্ঠ নিয়তে। বাকী পঞ্চাল টাকা দান করল লোক দেখানোর নিয়তে। পরের পঞ্চাল টাকা দান করার সময় রিয়া মিশ্রিত হওয়ার কারণে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
খ. যদি ইবাদতটির শেষাংশ প্রথমাংশের ওপর ভিত্তিশীল হয় তবে এরও দু’টি অবস্থা।
ক. ইবাদতকারী ব্যক্তি রিয়াকে প্রতিহত করবে এবং রিয়ার ওপর স্থির হবে না। এমতাবস্থায় রিয়া ইবাদতে কোনো প্রকার প্রভাব ফেলবে না। অথবা কোনো ক্ষতিও করবে না।
যেমন নবী করিম (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা আমার উম্মতের মনের মধ্যে যেসব কথা উদিত হয় সেগুলোকে ক্ষমা করে দেবেন। যদি তা কাজে পরিণত না করে বা মুখে তা উচ্চারণ না করে।
খ. অপর অবস্থা হলো- ইবাদতকারী রিয়ার প্রতি তুষ্ট থাকবে এবং রিয়াকে অন্তরে প্রতিহত করবে না। এমতাবস্থায় তার পূর্ণ ইবাদতটি বাতিল হয়ে যাবে। কেননা ইবাদতের শেষাংশ প্রথমাংশের ওপর ভিত্তিশীল। যেমন কোনো ব্যক্তি নামাজে দাঁড়াল ইখলাসের সঙ্গে- অতঃপর দ্বিতীয় রাকাতে তার অন্তরে রিয়ার উদয় হলো এবং সেই ব্যক্তি রিয়ার প্রতি তুষ্ট থাকল (অন্তরে রিয়াকে প্রতিহত করল না) এমতাবস্থায় পূর্ণ নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। কেননা নামাজের শেষাংশের সঙ্গে প্রথমাংশ সম্পৃক্ত রয়েছে।
তৃতীয় প্রকার: ইবাদত সমাপ্ত করার পর যদি ইবাদতকারীর অন্তরে রিয়ার উদ্ভব ঘটে, তবে তা ইবাদতে কোনো প্রকার প্রভাব ফেলবে না বা ইবাদতটি বাতিলও হবে না। কারণ বিশুদ্ধভাবে তা সম্পাদিত হয়েছে। সম্পাদিত হওয়ার পর রিয়ার কারণে তা নষ্ট হবে না।
ইবাদত দেখে কেউ প্রশংসা করলে এবং তাতে ইবাদতকারী খুশি হলে তা রিয়ার অন্তর্গত হবে না। কারণ এটি ইবাদত সমাপ্ত হওয়ার পর প্রকাশিত হয়েছে। আনুগত্যের কাজ করার পর মানুষ খুশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। বরং এটি তার ঈমানের প্রমাণ বহন করে।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘নেকির কাজ করে যে খুশি হয় এবং পাপের কাজকে যে খারাপ মনে করে, সেই প্রকৃত মুমিন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটাই মুমিনের আগাম শুভ সংবাদ। ’
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
এমএইউ/