জ্ঞানীরা বলেন, দুনিয়া সময় তথা কিছু ঘণ্টা, দিন, মাস, বছর ও যুগের সমষ্টিমাত্র। বছর ফুরিয়ে যায়, দিন চলে যায়, মাস অতিবাহিত হয়।
কোরআনে কারিমে অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘ভুপৃষ্ঠের সবকিছু ধ্বংসশীল। আপনার মহিমান্বিত ও মহানুভব প্রতিপালকের সত্তা অমর থাকবে। ’ -সূরা রহমান: ২৭-২৮
বয়সের পার্থক্য অনুযায়ী মানুষের জীবন নির্ধারিত হয় না। মৃত্যুর কোনো নির্ধারিত সময় নেই। এটা অনিশ্চিত একটা বিষয়।
এই অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে জ্ঞানীরা আমলনামা সমৃদ্ধির কাজ করেন। তাই তো বলা হয়, তারাই সৌভাগ্যবান, যে তার দুনিয়ার সময়কে কাজে লাগিয়েছে। নিজের কর্ম সংশোধন করে।
যেহেতু দুনিয়ার জীবনে সময় গড়াচ্ছে, আর মানুষের জীবন সময়ের ক্ষুদ্রসীমায় আবদ্ধ। এই সময়ে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। সে তার জীবন কোথায় ব্যয় করেছে, যৌবন কীসে শেষ করেছে; এ বিষয়ে তাকে হিসাব দিতে হবে। জীবন যতই দীর্ঘ হোক তার পরিসর সীমিত। কোরআনে কারিমে তা বলা হয়েছে এভাবে, ‘তোমরা পৃথিবীতে কত বছর অবস্থান করেছিলে? তারা বলবে, একদিন অথবা দিনের কিছু সময়। ’ -সূরা মুমিনুন: ১১২-১১৩
বর্ণিত আয়াতের প্রেক্ষিতে বলা যায়, আল্লাহতায়ালা মানুষকে অহেতুক সৃষ্টি করেননি। আর এমনি এমনি মানুষকে তিনি ছেড়েও দেবেন না। তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন মানুষের মধ্যে কে সবচেয়ে উত্তম আমল করে- তা পরীক্ষার জন্য।
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় বিপদ ও জঘন্যতম সংকট হলো- অযথা সময় নষ্ট হওয়া ও কোনো আমল ছাড়া জীবনের মুহূর্তগুলো শেষ হওয়ার কারণে অনুশোচনা করা।
আর এ অনুশোচনা ও অনুতাপ শুরু হয় মৃত্যুর পথে। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের কারও কাছে মৃত্যু চলে এলে সে বলে, হে রব! আমাকে ফিরিয়ে দিন, যেন আমি ভালো কাজ করতে পারি; যা আমি করিনি। কখনও না, এটা তো মুখের একটি কথা মাত্র। ’ -সূরা মুমিনুন: ৯৯-১০০
কোরআনের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘মৃত্যুর নির্ধারিত সময় চলে এলে আল্লাহ কিছুতেই কোনো ব্যক্তিকে সময় দেবেন না। ’ -সূরা মুনাফিকুন: ১১
তাই দুনিয়ায় মানুষের সময় কাটানো উচিত ইবাদত-বন্দেগি ও আমলের মাধ্যমে। এই দুনিয়ার সময়ই হলো- আমল করার সুযোগ। এটা একটি নেয়ামত, যার শোকর আদায় করতে হবে।
আর নেয়ামতের শোকর আদায়ের পন্থা হলো- আল্লাহর ইবাদতে সময়কে কাজে লাগানো। এর বিপরীতে আল্লাহর অবধ্যতায় জীবন ও সময় ব্যয় করা নিষিদ্ধ।
কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘যে অণু পরিমাণ ভালো কাজ করবে, সে তার ফল দেখতে পাবে। আর যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে, সে তার কুফল দেখতে পাবে। ’ -সূরা জিলজাল: ৭-৮
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
এমএইউ/