অনেকের মতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার মিছিল কিছুটা জৌলুস হারালেও শোকের মাতম আগের তুলনায় বেড়েছে বলেই জানালেন অংশগ্রহণকারীরা। তাদের মতে, কারবালার মর্মান্তিক শোকের স্মরণে এ তাজিয়া মিছিল যা সাজানো হয়েছে কারবালার শোকের নানা প্রতিকৃতি দিয়ে।
আরবি বা হিজরি সাল অনুসারে ১০ মহরম তথা আশুরা সমগ্র মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের দিন। ঘটনাবহুল এ দিনে বর্তমান ইরাকের অন্তর্গত কারবালা প্রান্তরে মুয়াবিয়ার হাতে নিহত হন ইমাম হোসেন। কারবালার এই মর্মান্তিক শোকের স্মরণে শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার পর রাজধানীর হোসেনি দালানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শুরু হয় তাজিয়া মিছিল। দুপুর ১টায় এর সমাপ্তি ঘটে ধানমন্ডি লেকের প্রতীকী ‘কারবালা’ প্রাঙ্গণে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে।
দুপুরে রাজধানীর জিগাতলা এলাকায় মিছিল এসে পৌঁছালে মিছিল থেকে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ স্লোগানে মাতম করতে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সী যুবক, নারী এবং শিশুদের। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ মিছিল থেকে মূলত কারবালার শোকাবহ ঘটনা দৃশ্যায়ন করা হয়। মিছিলে বুক চাপড়ে, মাতম করে শোক প্রকাশ করেন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষরা।
এ প্রসঙ্গে মিছিলে অংশগ্রহণকারী আবিত হাসান বলেন, তাজিয়া মিছিলের শুরুতেই দু’টি কালো গম্বুজ বহন করা হয় বিবি ফাতেমার স্মরণে। এ ছাড়াও মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন পতাকা নিয়ে আসেন। মিছিলে দু’টি ঘোড়া রয়েছে যার মধ্যে একটিকে রং দিয়ে রক্তের রূপ দেওয়া হয়েছে।
মিছিলে পতাকাবহনকারী সবুজ হোসেন জানান, ইমাম হোসেনের সমাধির আদলে তৈরি করা হয়েছে তাজিয়া। একদল রয়েছেন যারা শোকের গান গাইতে গাইতে সামনের দিকে এগুচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ বলে মাতম করছেন। গায়ে রঙ লাগিয়ে কারাবালার সেই ঐতিহাসিক রক্তপাতের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে ।
এবার তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে ৩০০ নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন হোসেনি দালানের সুপারিনটেনডেন্ট এম এম ফিরোজ হোসাইন। এর পাশাপাশি নিয়োজিত রয়েছে র্যাব, পুলিশের প্রায় ৫ শতাধিক সদস্য।
সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে বের হয় তাজিয়া মিছিল। একইসঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশীবাজার, লালবাগ, পল্টন, মগবাজার থেকেও আশুরার মিছিল বের হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮
এইচএমএস/এনএইচটি