ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

পুরান ঢাকায় শতবর্ষী বিখ্যাত মসজিদ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
পুরান ঢাকায় শতবর্ষী বিখ্যাত মসজিদ কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ।

পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা। কসাইটুলির কে পি ঘোষ রোড। পাশে দৃষ্টিনন্দন ও বিভাময় কারুকার্যসমৃদ্ধ একটি মসজিদ সমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। স্থাপত্যশৈলী ও নকশাকৃত দৃশ্যে দেদীপ্যমান। ৩০ বছর ধরে বিটিভির আজানের সময় এ মসজিদের দৃশ্য দেখানো হতো। লোকজনের কাছে ‘কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ’ নামেই পরিচিত।

মসজিদটি শত বর্ষ পেরিছে ২০০৭ সালে। জনাব আবদুল বারি নামের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ধর্মভীরু মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা।

এশিয়াটিক সোসাইটির ‘ঢাকা কোষ’ গ্রন্থের তথ্যানুযায়ী ১৯০৭ সালে তিনি এটি নির্মাণ করেন।

মসজিদটির মূল অংশ এবং বারান্দাসহ প্রায় দুই কাঠা জায়গায় ওপর অবস্থিত। মূল মসজিদের অবকাঠামোয় আলাদা সমতল ছাদ নেই। ভেতর দিয়ে ছাদের বেশিরভাগ অংশে সরাসরি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন আকারের কয়েকটি গম্বুজ। মসজিদ ভবনের মধ্যে বড়, দুই পাশে মাঝারি ধরনের ও চারকোনায় একই ডিজাইনের চারটি গম্বুজ রয়েছে। এছাড়াও ছয়টি ছোট ও দুইটি জোড়া পিলারের দুইটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোর উচ্চতা ৫-১২ ফুট। ছাদবিহীন মসজিদের প্রতিটি পিলারের মাথায় রয়েছে গম্বুজ বা মিনার।

মসজিদের মূল ভবনের ভেতরে ও বাইরের দেয়ালসহ সম্পূর্ণ জায়গা সিরামিক দিয়ে ফুল, ফুলের গাছ ও আঙুর ফলের ছবির মাধ্যমে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

কয়েক বছর আগে মূল মসজিদের পূর্ব ও উত্তর পার্শ্বে সম্প্রসারণ করা হয়। মূল ভবনটি একতলা হলেও বর্ধিত অংশটি তিনতলা। বর্তমানে মসজিদটি প্রায় পাঁচ কাঠা জায়গায় অবস্থিত। নতুন অংশের পুরোটাই উন্নতমানের টাইলস দ্বারা ঢেকে রাখা হয়েছে। চাকচিক্য এ চিনির টুকরো মসজিদের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে রয়েছে অজু করার একটি হাউস। হাউসে সিমেন্টের একটি পদ্মফুলও তৈরি করে রাখা হয়েছে।

আশির দশকের শেষের দিক থেকে এ পর্যন্ত মসজিদের বিভিন্ন অংশের সংস্কার করা হলেও মূল শৈল্পিকতা, কারুকাজ ও নকশায় কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। সংস্কারের সময় মসজিদটির আয়তনে প্রশস্ততা আনা হয়। মূল স্থাপনার লাগোয়া অংশে তৈরি করা হয়, বহুতল বিশিষ্ট নতুন ভবন। মসজিদটিতে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন প্রায় ১৫ শ মুসল্লি।  কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ। মসজিদের মূল সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য চিনিটিকরির কারুকাজ ও নির্মাণশিল্পীদের নিখুঁত কর্মযজ্ঞ। দেয়াল ও ফলকগুলো মোগলীয় নির্মাণশৈলী ও রীতি সাজানো এবং সৌন্দর্যকরণ করা হয়েছে। মূল স্থাপনার ছাদে রয়েছে সুবিশাল তিনটি গম্বুজ। রঙবেরঙের চীনামাটির টুকরোর পাশাপাশি ব্যাপকহারে চীনা মোজাইকেরও ব্যবহার করা হয়েছে। সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের স্মারক মসজিদটিকে অনেকে ‘চিনির টুকরার মসজিদ’ও বলে থাকেন। কিন্তু প্রাচীনতার কারণে ও কিছুটা অযত্নে মসজিদের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যগুলো দিনদিন নষ্ট হতে চলেছে। কিছু পাথর ও উজ্জ্বল টালিগুলো খসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

যাতায়াত যেভাবে
ঢাকার গুলিস্তান থেকে রিক্সাযোগে কসাইটুলী চিনি মসজিদ। অথবা স্থানীয়দের জিজ্ঞেস করে হেঁটেও যাওয়া যায়।

সলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
এমএমইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।