প্রতিবছর হিজরি রবিউল আওয়ালের প্রথম বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনব্যাপী ‘এহইয়ায়ে সুন্নাত ইজতিমা’র আয়োজন করা হয়। দেশের গণ্য-মান্য, বরেণ্য ও চিন্তাশীল আলেম-উলামা এতে শরিক হন।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত সহস্রাধিক উলামায়ে কেরামের জন্য এতে শবগুজারি (রাতজাগরণ), আধ্যাত্মিক বয়ান, দরুদ-জিকির ও সুন্নত মোতাবেক বিভিন্ন আমলের প্রশিক্ষণ ইত্যাদির নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইসলাহী জোড়ের আধ্যাত্মিক আলোচনা-পর্যালোচনা ও কোরআন-সুন্নাহর মিশেলে প্রদত্ত দিক-নির্দেশনায় তারা ঋদ্ধ হন।
মারকাযুল ফিকরিল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাযাত্রা ও দীর্ঘ পথচলা—উপমহাদেশের অন্যতম ইসলামী চিন্তাবিদ ফকিহুল মিল্লাত মুফতি আবদুর রহমান (রহ.)-এর নিখুঁত তত্ত্বাবধানে। শিক্ষা-দীক্ষা, ইসলাম প্রচার ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি, সুকুমারবৃত্তির জাগরণ ও মননচর্চায় এই প্রতিষ্ঠান এবং এর কর্তাব্যক্তিদের অবদান বহুধা-বিস্তৃত।
প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়েই বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলিম বিশ্বে খ্যাতি ও প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী উচ্চশিক্ষায় সবার কাছে যেমন সমাদৃত, তেমনি আধ্যাত্মিকতা ও আত্মশুদ্ধির অঙ্গনেও এটি অনন্যতার স্বাক্ষর রেখেছে।
ফকিহুল মিল্লাত (রহ.) ছিলেন উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা-ব্যক্তিত্ব আওলাদে রাসুল সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.)-এর সরাসরি ছাত্র। তিনি শায়খুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া (রহ.) থেকে আধ্যাত্মিক দীক্ষা পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভি (রহ.)-এর অন্যতম খলিফা শায়খ আবরারুল হক হারদুয়ি (রহ.)-এর খলিফা। তিনি আধ্যাত্মিক শুদ্ধিচর্চার জন্য ‘মারকাযুল ইসলামী’ বা ইসলামিক রিচার্স সেন্টারে একটি ‘খানেকাহ’ প্রতিষ্ঠা করেন। যার নাম দেওয়া হয়—‘খানেকাহে এমদাদিয়া আশরাফিয়া আবরারিয়া। ’
মারকাযে প্রতিদিন আত্মশুদ্ধির অংশ হিসেবে সাহরির সময় জিকির, সুন্নতি জিন্দেগি গড়ার প্রতি উৎসাহ দেওয়া ও ছাত্রদের যাবতীয় বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করা হয়। প্রতি আরবি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার আত্মশুদ্ধিমূলক আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়।
ফকিহুল মিল্লাত (রহ.) ২০১৫ সালের নভেম্বরের ১০ তারিখে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমণ করেছেন। তখন থেকে তার সুযোগ্য সাহেবজাদা মুফতি আরশাদ রহমানি হাফিজাহুল্লাহ মরহুম ফকিহুল মিল্লাতের অনুকরণেই সার্বিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রত্যেকটি কাজ ও বিষয় তিনি সফল কাণ্ডারীর ভূমিকায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও পিতার মতো হজরত হারদুয়ী (রহ.)-এর গুরুত্বপূর্ণ খলিফা। আধ্যাত্মিক দীক্ষা ও আত্মশুদ্ধিবিষয়ক অঙ্গনে তিনি ফকিহুল মিল্লাত (রহ.)-এর মহান মিশনও সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
ফকিহুল মিল্লাত (রহ.)-এর ইন্তিকালের পর প্রথম (১৪৩৭ হিজরি) ‘এহয়ায়ে সুন্নাত ইজতিমা’ অত্যন্ত সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল মুফতি আরশাদ রহমানি সাহেবের তত্ত্বাবধানে প্রথম ইজতিমা। পরবর্তী সবগুলো ইজতেমায়ই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মারকায কর্তৃপক্ষও ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছর দূর-দূরান্ত থেকে আগত উলামায়ে কেরামের জন্য যথাসম্ভব উন্নত ও অভিজাত আতিথেয়তার ব্যবস্থা করেছেন।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
এমএমইউ