ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সংক্ষিপ্ত হজ গাইড: মক্কায় পৌঁছার পর করণীয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
সংক্ষিপ্ত হজ গাইড: মক্কায় পৌঁছার পর করণীয়

মোয়াল্লেমের গাড়ি মক্কায় আপনাকে হোটেলের পাশে নামিয়ে দেবে। হোটেলের রুম বুঝে পাওয়ার পর মালপত্র রেখে একটু বিশ্রাম নিন।

নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহ পালন করুন। মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেক প্রবেশপথ আছে। সব ক’টি দেখতে একই রকম।

কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন- ‘বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ। ’ আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।

কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন। জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন। এটাই সবচেয়ে ভালো।
ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে। যেমন- সাতবার তাওয়াফ করা, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা, মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।

মনে রাখবেন, কাবা ঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে। সেগুলো হলো- হাজরে আসওয়াদ, রুকনে ইরাকি, রুকনে শামি ও রুকনে ইয়ামেনি।
হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রুকনে ইরাকি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত ও হাতিম)। তারপর যথাক্রমে রুকনে শামি ও রুকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়।

হজের প্রকারভেদ
হজ তিন প্রকার। তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ।  
১. হজের মাসগুলোয় (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, ওমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে ‘হজে তামাত্তু’ বলে।  
২. হজের মাসগুলোয় একই সঙ্গে হজ ও ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ ও হজ করাকে ‘হজে কিরান’ বলে।  
৩. শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে ‘হজে ইফরাদ’ বলে।  
আর ওমরাহ হলো হিল (কাবা শরিফের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করা।

ইহরাম অবস্থায় করণীয়
১. সহবাস এবং ওই বিষয়ে কোনো আলোচনা করা যাবে না।
২. পুরুষদের জন্য শরীরের আকৃতি ঢেকে নেয় এমন কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়।
৩. কথা ও কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না।
৪. পুরুষদের ক্ষেত্রে মাথা বা মুখ ঢাকা যাবে না; এমনকি টুপিও পরা যাবে না।
৫. মহিলাদের মাথায় অবশ্যই কাপড় রাখতে হবে, তবে মুখমণ্ডল স্পর্শ করে এমন কাপড় পরবেন না।
৬. নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ ও শরীরের একটি লোমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না।
৭. কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না।
৮. কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না।
৯. ক্ষতিকারক সব প্রাণী মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না।

জরুরি কথা 
হজ মূলত একটি প্র্যাকটিক্যাল ইবাদত। সরাসরি নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে হজের মাসয়ালা বোঝানো মুশকিল। তবে হজের মাসয়ালাকে খুব জটিল মনে করাও ঠিক নয়। আল্লাহর কাছে সব সময় দোয়া করতে হবে, তিনি যেন হজের প্রতিটি কাজ সহজ করে দেন। সুতরাং আশঙ্কার কিছুই নেই। হিম্মত করুন আর আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। অব্যাহতভাবে দোয়া চালিয়ে যান। যেখানে কোনো সমস্যা মনে হবে অভিজ্ঞ কোনো আলেমের কাছে জেনে নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।