ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ভুল চিকিৎসায় পাইলটের মৃত্যু: আদালতে বোনের মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
ভুল চিকিৎসায় পাইলটের মৃত্যু: আদালতে বোনের মামলা

ঢাকা: ভুল চিকিৎসায় গালফ এয়ারের পাইলট যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের দ্বৈত নাগরিক ইউসুফ তালা আলহেন্দির মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকার আদালতে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের চিফ কনসাল্টেন্ট ওমর ফারুককে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন পাইলটের বোন তালা আলহেন্দি। যিনি নিজেও আমেরিকার একজন নাগরিক। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী সাব্বির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় বলা হয়, গত ১৪ ডিসেম্বর ওই পাইলটের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ৩১ জানুয়ারি থানায় মামলা করতে যান তার বোন। তবে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করায় তারা আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।  

পাইলট ইউসুফের পরিবারের অভিযোগ, গত ১৪ ডিসেম্বর ইউসুফ আলহেন্দি ঢাকার লা মেরিডিয়েন হোটেলে ছিলেন। খুব সকালে তার গালফ এয়ারের ফ্লাইট পরিচালনার কথা ছিল। রাত পৌনে ৩টায় উঠে তিনি ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন। এরপর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং পড়ে যান। তখন তার কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। বিমানবন্দরে তার প্রথম কার্ডিয়াক অ্যাটাক্ট হয়। তখন তিনি পাঁচ মিনিট কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) পেয়েছেন। ক্রমশ তার রক্তচাপের অবনতি হতে থাকে। এরপর ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তবে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে থাকা চিকিৎসক ওমর ফারুক ও দায়িত্বরত নার্সরা তাকে ৫ ঘণ্টা কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এরপর দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে পাইলট ইউসুফ মারা যান।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তালা আলহেন্দি বলেন, ঘটনার পর ৫ ঘণ্টা তিনি বাংলাদেশে এসে ইউনাইটেড হাসপাতালের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তাকে অসহযোগিতা করা হয়। দেরি করে কাগজপত্র দিলেও সেখানে জালিয়াতি করা হয়েছে।

তালা এলহেন্দি বলেন, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সময় তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করেছেন ডা. কায়সার নাসির। কিন্তু আমার ভাইয়ের পরিবারের কাছে চিকিৎসার যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে তাতে তার নাম পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে আমার ভাইয়ের অ্যাজমা ছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেছে, যে ভুল করে এটা বাদ পড়ে গেছে। ফোনে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তিনি সশরীরে রোগীর কাছে উপস্থিত ছিলেন না।

সংবাদ সম্মেলনে মূলত তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায় বিচার চান তালা আলহেন্দি। সেইসঙ্গে ইউনাইটেড হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
কেআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।