ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আইন ও আদালত

আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার শুরু, ট্রাইব্যুনালে বাবার আকুতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৩৬, আগস্ট ২৮, ২০২৫
আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচার শুরু, ট্রাইব্যুনালে বাবার আকুতি

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ নিহতের বাবা মকবুল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সাক্ষ্য দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবু সাঈদের বাবা। তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে আকুতি জানান, বেঁচে থাকতে যেন ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেন।

মকবুল হোসেন জানান, গত ১৬ জুলাই তিনি মাঠে কাজ করে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কিছুক্ষণ পর খবর আসে, সাঈদ আর বেঁচে নেই। এই খবর শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তার ছেলে মেধাবী ছিল। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি এবং এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছিল। বেরোবিতে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করত।

হাসপাতালে যাওয়ার পর প্রথমে পুলিশ তাদের ছেলের লাশ দেখতে দেয়নি বলে জানান মকবুল হোসেন। ওইদিন রাত ৩টায় আবু সাঈদের লাশ বাড়িতে আনা হয়। প্রশাসন তখনই দাফনের জন্য চাপ দিলেও তারা রাজি হননি। পরদিন দুটি জানাজা শেষে বাড়ির কবরস্থানে আবু সাঈদকে দাফন করা হয়।

মকবুল হোসেন আরও জানান, তিনি একবার তার ছেলের মরদেহ দেখেছিলেন। তার পুরো বুক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল এবং মাথার পেছনেও ছিল রক্তের দাগ। আমির আলী ও সুজন নামে দুজন সাঈদকে গুলি করেছিল বলে তিনি শুনেছেন। এর কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগ নেতা পোমেল বড়ুয়া তার ছেলের গলা চেপে ধরেছিলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আবু সাঈদের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে শহীদ হয়েছে। ওইদিনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সকলের কঠোর শাস্তি চাই। বাবা হিসেবে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই। ’

এই মামলায় মোট ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেরোবির সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদ এবং সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসহ ৬ জন বর্তমানে কারাগারে আছেন। বাকি ২৪ জন এখনো পলাতক। পলাতক আসামিদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য সরকার ৪ জন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে।

গতকাল বুধবার চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। তদন্ত সংস্থা গত ২৪ জুন এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল, যেখানে মোট ৬২ জনকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।