ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৩
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন

ঢাকা: জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমরা বাংলাদেশের বিচারপতিরা আমরা হলাম শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’- আপিল বিভাগের এক বিচারপতির এমন বক্তব্যকে কেন্দ্রকে মিছিল-স্লোগান-সভা অব্যাহত রাখায় বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) আপিল বিভাগে এমন আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।

আবেদনে বাদী হয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।

বিবাদী করা হয়েছে আইনজীবী কায়সার কামালসহ সাতজনকে। পরে এক ব্রিফিংয়ে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী বলেন, আজকে আপিল বিভাগে একটি আদালত অবমাননার আবেদন নিয়ে গিয়েছিলাম। আজকে কজলিস্টে আসলে জানতে পারবেন কালকে (শুনানি) হবে কিনা।

এক প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী বলেন, আমরাতো কোর্ট অফিসার। কোর্টের ভাবমূর্তি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে কতিপয় আইনজীবীরা বিচারপতিদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের শব্দ বলছেন। যেটা আদালত অবমাননার শামিল।  

তিনি বলেন, বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ এ বলে বিভিন্ন জায়গায় স্লোগান দিচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, এটা কি কোর্টকে সম্মান করছি? এটা শেষ আশ্রয়স্থল। এটা কি ডেমোলিশ করে দিতে পারি? যার কারণে এ আবেদন করেছি।

গত ১৭ আগস্ট সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এক শোকসভায় প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতিদের বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ১৬ আগস্ট জাতীয় পত্রিকাগুলোতে সবিস্তারে প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আজকে আমাদের সংবাদ সম্মেলন।  

তিনি বলেন, গত ১৫ আগস্টের আলোচনা সভার প্রদত্ত কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্যের কিছু কিছু অংশ বিচারপতি হিসেবে নেওয়া শপথের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন কিনা তা প্রশ্ন রাখার দাবি রাখে। সাধারণত কোনো রাজনৈতিককর্মী তার দলীয় সভায় যে ধরনের বক্তব্য দেন, অনেক বিচারপতির বক্তব্যে তেমনই একজন রাজনীতিবিদের বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়।  

সভায় বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ হিসেবে বিচারপতিদের চিহ্নিত করেছেন। তিনি স্পষ্টতই দেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে শাসক দলের নেতাদের মতো রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, ‘ইদানিং সুষ্ঠু নির্বাচন, বিদেশি প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এসব নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে ...শুধু ভোট দেওয়াই একমাত্র গণতন্ত্র নয়। ’

বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে মৌলিক অধিকার জনগণের রয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন ‘সারা পৃথিবীতে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখে না, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন? 

বিচারকদের এহেন বক্তব্য কতটুকু বিচারক সুলভ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক তা সহজেই অনুমেয়। তারা বিচারপতির মহত্ব ধারণ করতে পারেন কিনা তা জনমনে অনেক সংশয় ও প্রশ্ন রাখছে। বস্তুত পক্ষে একজন রাজনীতিকের বক্তব্যই প্রতিধ্বনিত হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন- বলে উল্লেখ করেন কায়সার কামাল।

এরপর বিভিন্ন সময়ে এনিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিছিল-সভা-স্লোগান দিয়ে আসছে। এমন প্রেক্ষাপেট তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৩
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।