বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলার বিষয়বস্তু ছিল না এবং আদালত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি বলে জানিয়েছেন ইসির আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। রোববার (০১ জুন) সকালে এ সংক্রান্ত রায়ের পর তিনি একথা বলেন।
এদিন সকাল ১০টার পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে রায় দেন।
রায়ের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতীকের বিষয় এই মামলার ইস্যু ছিল না। প্রতীকের বিষয়ে মাননীয় আদালত কোনো নির্দেশনা দেননি। ওটা ২০১৬ সালে অন্য একটা মাধ্যমে হয়েছিল। উনাদেরকে অন্যভাবে এটার সমাধান করতে হবে।
নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াতকে ২০০৮ সালে নিবন্ধন দিয়েছিল। হাইকোর্ট যে রায়টা দিয়েছিল ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়ে; ওই রায়টাকে আজ মাননীয় আদালত বাতিল করে দিয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের রায়ের আগে যে অবস্থাটা ছিল, সেই অবস্থায় ফেরত এলো।
এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন ২০১৩ সাল পর্যন্ত বৈধই ছিল। ২০১৩ সাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন জামায়াতের কনস্টিটিউশন বিষয়ে পর্যালোচনা করছিলেন, ওই পর্যালোচনা স্টেজে ওটা স্টে হয়ে হয়ে গিয়েছিল হাইকোর্টে। এখন ইলেকশন কমিশনকে ডিরেকশন দিয়েছে আপিল বিভাগ ওই পর্যায় থেকে শুরু করার জন্য।
এর আগে গত ১৪ মে এ মামলায় আপিল শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন।
এরপর আপিলটি পুনরুজ্জীবনের জন্য আবেদন করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর আদালত বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য রিস্টোর করেছেন অর্থাৎ পুনরুজ্জীবন করেছেন। এরপর ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল। চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষে মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।
রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।
২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
আগের নিউজ লিংক>>
জামায়াতের ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের বিষয়ে নিষ্পত্তি করবে ইসি: শিশির মনির
নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার রায়ে জামায়াত আমির বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’
হাইকোর্টের রায় বাতিল, জামায়াতের নিবন্ধন বৈধ
কেআই/এসএএইচ