ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ষোড়শ সংশোধনীর আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে দুই মাস সময়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৭
ষোড়শ সংশোধনীর আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে দুই মাস সময়

ঢাকা: সংসদের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে দুই মাস সময় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির বেঞ্চ এ আপিল শুনানির জন্য আগামী ৮ মে সময় নির্ধারণ করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

এছাড়াও এ মামলায় আপিল বিভাগের নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যামিকাস কিউরি ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল ও এমআই ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ড. কামাল হোসেন তার লিখিত মতামত প্রস্তুত করেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। চাইলে দাখিল করতে পারবেন। বাকি অ্যামিকাস কিউরিদেরকেও (আদালতের বন্ধু বা আইনিসহায়তাকারী) দ্রুত লিখিত মতামত জমা দেওয়ার জন্য আদালত অনুরোধ জানিয়েছেন।
 
সকালে অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল শুনানিতে প্রস্তুতির জন্য আট সপ্তাহ সময় চান। এ সময় আদালত বলেন, এ মামলায় আপনি হাইকোর্টে সাবমিশন রেখেছেন। এখানে নতুন কিছু নেই। ঠিক আছে ০৮ মে পর্যন্ত সময় দিলাম। এরপর আর সময় দিতে চাই না।

পরে ড. কামাল হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুই মাস সময় দিয়েছেন আদালত। আমি এরইমধ্যে আমার লিখিত বক্তব্য রেডি (তৈরি) করেছি।

লিখিত বক্তব্যে কি বলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, এখানে নতুন কিছু নেই। আমি হাইকোর্টেও অ্যামিকাস কিউরি ছিলাম। হাইকোর্টের রায়ে আমার বক্তব্য সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জাস্ট ওটার একটু ইলাবোরেট ব্যাখ্যা থাকবে আর কি।  

এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি ১২ জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু বা আইনি সহায়তাকারী) নিয়োগ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ০৭ মার্চ আপিল শুনানির দিন ধার্য করেন।

অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা হলেন- ড. কামাল হোসেন, এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, আজমালুল হোসেন কিউসি, রফিক-উল হক, আবদুলওয়াদুদ ভূঁইয়া, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, টিএইচ খান, এম আই ফারুকী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফিদা এম কামাল ও শফিক আহমেদ।

ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি চেয়ে বাদীপক্ষের করা আবেদনের শুনানির জন্য গত ০৫ জানুয়ারি দিন ধার্য ছিলো চেম্বার আদালতে। ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ০৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
 
২০১৫ সালের ২১ মে রুলের শুনানি শুরু হয়।

গত বছরের ১০ মার্চ এ রুলের শুনানি শেষে ০৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।

ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে দুই বিচারপতির দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত বছরের ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। ০৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ বলে দেওয়া রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের রায় প্রকাশিত হয়।

গত ০৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৭/আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।