অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে বৈঠক শেষে শনিবার (০৪ নভেম্বর) দুপুরে এ কথা জানান তিনি।
বেলা পৌনে বারটার দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এসে বৈঠকে বসেন আইনমন্ত্রী।
দুই অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ রিভিউ আবেদন তৈরিতে সংশ্লিষ্টরা বৈঠকে অংশ নেন।
৭৯৯ পৃষ্ঠার সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের বৃহৎ পরিসরে পর্যালোচনা ও রিভিউ করতে সহকর্মীদের নিয়ে ১১ সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। কমিটির সদস্যরা গত ১৫ অক্টোবর থেকে প্রতি কার্যদিবসে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পর্যালোচনা থেকে রিভিউ আবেদন তৈরির কাজ করছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে ওই কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের রিভিউ আবেদন দাখিল করতে হবে। আমরা যুক্তিগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে এখানে বসেছিলাম। মোটামুটি যুক্তিগুলো চূড়ান্ত করেছি। এখন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছি’।
কবে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ মাসের মধ্যেই।
রিভিউ আবেদনে পুরো রায় বাতিল চাওয়া হবে কি-না?- জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রিভিউয়ের আবেদন করবো। তার মানে পুরো রায়কে প্রশ্ন করছি। রায়টা যে ঠিকমতো হয়নি, সেটার কথাই আমরা বলছি। এখানে কিছু এক্সপাঞ্জ করার কথা নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু পুরোটাই চ্যালেঞ্জ করছি’।
যুক্তিতে কি কি আছে?- জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তা এ মুহূর্তে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে ওই রায়ে এ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ন্যস্ত করেছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ বিশেষত রায়ের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের আবেদন জানাবেন বলে জানা গিয়েছিল। এখন পুরো রায়টিই বাতিল চাওয়া হবে বলে জানালেন আইনমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর গত ১১ অক্টোবর মাহবুবে আলম জানিয়েছিলেন, রায় হাতে আসার নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদনের নিয়ম। এ সময়ের মধ্যেই আবেদন জানানো হবে।
আর গত ২৩ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘রায়ে একজন ছাড়া সবাই (আপিল বিভাগের বিচারপতিরা) আলাদা আলাদা মত দিয়েছেন। কাজেই বৃহৎ পরিসরের রায় পর্যালোচনা করছি। নিজেদের ভেতরে আলাপ-আলোচনা করছি। পয়েন্টগুলো প্রস্তুত করছি। কাজ শেষ হলে রিভিউ আবেদন দায়েরের প্রস্তুতি নেবো’।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন, ‘এ রায়ের বিষয়ে পড়া হচ্ছে। ভালোভাবে পড়ে, পরীক্ষা করে রিভিউ আবেদন জানানো হবে। এজন্য সময় লাগছে’।
গত ০৩ জুলাই ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
ফলে মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছিল।
গত ০১ আগস্ট সকালে পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
ইএস/এএসআর