ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশ বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশ

ঢাকা: নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী এক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এ বিষয়টি জানান।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না।

নেই। একজন ব্যক্তির (বিচারপতি এসকে সিনহা) রাজনৈতিক অভিলাষের জন্য সংকট তৈরি হয়েছিল। তিনি রিমুভ হওয়াতে সংকট দূরীভূত হয়েছে। এ কারণে আজ নিম্ন আদালতের গেজেট বের হয়েছে। ’’

এরআগে বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার গেজেট প্রকাশে সরকারকে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় আপিল বিভাগ। সেসময় এর ফাইনাল খসড়া রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে ছিল।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তারও আগে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।  

গত ৫ নভেম্বর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে গেজেট প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষের করা চার সপ্তাহের সময়ের আবেদনের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, আইনমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বসতে চান।

এর মধ্যে গত ১৬ নভেম্বর রাতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। ওইদিন বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতির হুকুম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এ গেজেট প্রকাশ করবো।

এদিকে ৩০ নভেম্বর আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, খসড়াটি এখনো রাষ্ট্রপতির দফতরে পৌঁছেনি। কারণ এটি প্রধানমন্ত্রীর দফতর ঘুরে তারপর রাষ্ট্রপতি দফতরে যাবে।

এর আগে ২১ নভেম্বর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে (আপিল বিভাগের সঙ্গে বৈঠক) যে ড্রাফটি এগ্রি করেছি সেটার ফাইনাল ড্রাফট করা হয়েছে এবং গতকাল (২০ নভেম্বর) সেটা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে মুহূর্তে ফিরে আসবে আমি আইন মন্ত্রণালয় থেকে সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো। এরপর সুপ্রিম কোর্ট থেকে সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের ৪ সপ্তাহের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়ান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আর গত ২০ আগস্ট পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়িয়েছিলেন।

এর আগে ৬ আগস্ট দুই সপ্তাহের সময় দিয়ে আলাপ-আলোচনা করার কথা বলেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

আপিল বিভাগের এ নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।

গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।

এরপর সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ১৬ জুলাই তখনকার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ সংক্রান্ত গেজেট শিগগিরই প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আইনমন্ত্রী। ফের ২৭ জুলাই বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খসড়াটি হস্তান্তর করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। কিন্তু গত ৩০ জুলাই সকালে ছয় বিচারপতির বেঞ্চে শুনানিকালে আইনমন্ত্রীর দেওয়া খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি সিনহা বলেছিলেন, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। তিনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী!

গেজেটটি দেখতে ক্লিক করুন>>> গেজেট

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
কেজেড/ইএস/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।