খুলনা: ঝিনাইদহের সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলায় আটজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানা যায়, ঝিনাইদহের বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীন পেশায় একজন কৃষক। তার বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ল্যান্স করপোরাল পদে টাঈাইল জেলার ঘাটাইল আর্মি মেডিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ও আরেক ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশ নৌ বাহিনী কোস্টগার্ডে কর্মরত।
২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট তারা দু’জনই বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরের দিন বড় ছেলে সাইফের শ্বশুর তাদের বাড়িতে আসার উদ্দেশে রওয়ানা হন। রাতে হাফিজের দু’ছেলে শ্বশুর সামসুল মোল্লাকে আনতে বদরগঞ্জ বাজারের দিকে যাত্রা করেন। ফেরার পথে বেলতলারদাড়ি এলাকায় পৌঁছালে রাস্তার ওপর গাছ ফেলানো দেখতে পান। তখন তারা বুঝতে পারেন ডাকাতির উদ্দেশে গাছটি পথে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে অজ্ঞাতনামা ছয়জন দুষ্কৃতকারী তদের ঘিরে ফেলে। এ সময় হফিজের বড় ছেলে সাইফ মোটরসাইকেল থেকে নেমে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন। দুষ্কৃতকারীদের একজন তাকে দা দিয়ে কোপ দিলে ডান হাত দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। কোপটি তার হাতের তালুতে লাগে। পরে তারা দা দিয়ে সাইফের গলার বামপাশে ও ঘাড়ে আঘাত করতে থাকেন। তারা পালিয়ে গেলে বাংকিরা বাজার মোড়ের পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহায়তায় সাইফকে ঝিনাইদহ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরেরদিন সাইফের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি ওই এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পুলিশ তদন্তে মাঠে নামে। তদন্তে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে আটজনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সবাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামি হলেন মো. আকিমুল ইসলাম, মো. ফারুক হোসেন, মো. মতিয়ার রহমান ওরফে ফইনে ও মোক্তার হোসেন অন্যান্যদের নাম উল্লেখ করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। যা মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মহসীন হোসেন ২০১৯ সালের ৩০ জুন আদালতে আটজনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
এমআরএম/আরআইএস