ঢাকা: ৬১৯ কোটি টাকার সার আত্মসাতের অভিযোগে মেসার্স নবাব অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি পরিবহন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নবাব খানের নামে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলায় নবাব খানের পরিবর্তে ফাহিম আহমেদ নামে একজন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
তবে কারাগারে নেওয়ার আগেই কোর্ট হাজতে ফাহিম নিজেকে নবাব খান নন বলে দাবি করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে তার কারাগারে পাঠানোর আদেশ বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে পুলিশ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ছদ্মবেশে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
মতিঝিল থানায় আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন এ তথ্য জানান।
কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা যায়, ফাহিম আহমেদ নামে ওই ব্যক্তিকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, নবাব খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সার উৎপাদন ও আমদানিকারক সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। গত ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মতিঝিল থানায় এ মামলা করেন বিসিআইসির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম বাণিজ্যিক) মো. সাইফুল আলম।
মামলা দায়েরের পর নবাব খান হাইকোর্টে জামিনের জন্য যান। হাইকোর্ট তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নবাব খানের হয়ে ফাহিম আহমেদ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর কোর্ট হাজতে তিনি নিজেকে ওই মামলার আসামি নন বলে দাবি করেন। পরে ডিএমপির অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি নিশ্চিত হন৷
আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রকৃত আসামি ফাহিম আহমেদ নন, নিশ্চিত হওয়ার পর তার হাজতি পরোয়ানা (সিডব্লিউ) এর আদেশ বাতিল করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়।
এর আগে বিসিআইসির চেয়ারম্যান শাহ মোহা. ইমদাদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা ৬৬ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বুঝিয়ে দিচ্ছে না মেসার্স নবাব অ্যান্ড কোম্পানি। এজন্য বারবার তাগাদা দিয়েও লাভ হয়নি। তাই আমরা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নবাব খানকে আসামি করে মামলা করেছি।
তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে বন্দর থেকে আমাদের গুদামে সার বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। বিদেশ থেকে আমদানি করা সার খালাসের পর কোম্পানির মালিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সার রেখেছিলেন। কিন্তু দফায় দফায় চিঠি দিলেও তিনি বিসিআইসিকে পাত্তা দিচ্ছেন না।
এরপর তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে মতিঝিল থানায় এ মামলা করে বিসিআইসি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২
কেআই/আরআইএস