কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার আলোচিত অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ট্রিপল মার্ডারসহ মরদেহ গুমের দায়ে তিনজনের আমৃত্যু, ৭ জনের যাবজ্জীবন এবং ৫ জনের ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আতিরিক্ত আদালত-১এর বিচারক তাজুল ইসলামের আদালত এই রায় দেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম রেজা (পলাতক) মৃত নুরু বিশ্বাসের ছেলে সোহেল রানা এবং হরিনাকুণ্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দারের ছেলে মানিক জোয়ার্দার (পলাতক)।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- পিচ্ছি মনির (পলাতক), মোটা জসিম (পলাতক), উল্লাস খন্দকার, তৈমূর ইসলাম বিপুল, ফারুক চেয়ারম্যান, আব্দুল মান্নান মোল্লা (পলাতক) এবং বিপুল চৌধুরী।
এছাড়া ১০বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মনির, সোহেল, জসিম, উল্লাস এবং মানিক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৩ অক্টোবর বিকেলে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের কবরস্থান সংলগ্ন হিসনা নদীর পাড়ে আসামি ফারুক চেয়ারম্যানের জমিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তিনজনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে দৌলতপুর থানা পুলিশ। পরে জানা যায় নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মজমপুর গ্রামের হাসান আলীর ছেলে মেহেদী হাসান সোহাগ, ঝিনাইদহের ২৯ কাঠা গোলাম মস্তফা সড়কের বাসিন্দা রেজাউল ইসলামের ছেলে রাসেল সরকার এবং যশোরের শার্শা উপজেলার বাঘআঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক হোসেনের ছেলে মুকুল হোসেন।
এ ঘটনায় নিহত মুকুল হোসেনের বড় ভাই ইলিয়াস কবির বকুল বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানায় অপহরণ করে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে মরদেহ মাটিতে পুঁতে রেখে গুমের অভিযোগে ১৬ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১১ সালে ৩১ মার্চ চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ জনের নামে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দৌলতপুর থানা পুলিশ।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী জানান, অনেক দেরিতে হলেও দৌলতপুর থানার চাঞ্চল্যকর ও নির্মম এই ট্রিপল হত্যা মামলায় চার্জগঠন পূর্বক সাক্ষ্য-শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণ হওয়ায় তিন জনকে আমৃত্যু, ৭ জনকে যাবজ্জীবন এবং ৫ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন পরিমাণ অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও জানান, ধার্যকৃত জরিমানার অর্থ পরিশোধ ব্যর্থ হলে প্রত্যেককে অতিরিক্ত আরও এক বছর করে সাজা ভোগ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ২১ মার্চ, ২০২২
এমএমজেড