খুলনা: খুলনায় মাহেন্দ্রচালক শেখ ওহিদুর রহমান রিপন হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামির হলেন—কিশোরগঞ্জ জেলার ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ নুর ইসলাম, একই এলাকার হরিদাসের ছেলে জনি দাস, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার আব্দুর রউফ সিকদারের ছেলে মো. রনি শিকদার ও বটিয়াঘাটা উপজেলা আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিল।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ জানান, ওহিদুর রহমান রিপন একজন মাহেন্দ্রচালক ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার লাবশা এলাকার শেখ তৌহিদুর রহমানের ছেলে। ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে গাড়ি চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে বাড়ি ফিরে না এলে পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরের দিন তার ছোট ভাই জানতে পারেন লবণচরা থানাধীন ডা. দিপু সাহেব নামে এক ব্যক্তির জমিতে একজন মাহেন্দ্রচালকের মরদেহ পাওয়া গেছে।
সংবাদ পেয়ে নিহত ওহিদুর রহমানের ভাই খুলনায় এসে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থেকে মাহেন্দ্রসহ চারজনকে আটক করা হয়। নিহত ওহিদুরের ভাই লবণচরা থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের লক্ষ্যে খুলনায় আসার জন্য ৭০০ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে রওনা হন। রাত নয়টার দিকে লবণচরা থানাধীন ডা. দিপু সাহেবের জমির কাছে পৌঁছালে আসামি মাসুদ ও রনি রশি দিয়ে ড্রাইভারের শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। শ্বাসরোধে তার মৃত্যু না হলে নুর ইসলাম রিপনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা মরদেহ ওই স্থানে ফেলে মাহেন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গোপালগঞ্জ এলাকার কাশিয়ানি পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে তারা আটক হন। এক পর্যায়ে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। আসামিরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালে ১৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
এমআরএম/এমজেএফ