ঢাকা: ডেসটিনির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার রায় হয়েছে। মোট ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানার এই টাকা থেকে পরিশোধ করা হবে গ্রাহকদের দায়দেনা। রায়ের পর একথা জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ আলী সালাম।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনকে ১২ বছরের সাজার পাশাপাশি ২০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাবেক সেনাপ্রধান হারুন অর রশিদ বীর প্রতীককে সবচেয়ে কম ৪ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তাকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মোহাম্মদ হোসেনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দেড় কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যসব আসামি মিলে আসামিদের মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানার এই টাকা গ্রাহকদের মাঝে কীভাবে বণ্টন করা হবে সে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের অভিমত দেন আদালত। আইনজীবী মীর আহম্মেদ আলী সালাম বলেন, ৬ সদস্যের একটি কমিটি হবে। যেখানে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব, পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার একজন ও একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট থাকবেন। এই কমিটির সচিব থাকবেন কোঅপারেটিভ (সমবায়) বিভাগের একজন সদস্য।
তিনি বলেন, এই কমিটিকে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রের অনুকূলে যে সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যারা ভোক্তা তারা কীভাবে পাবে, কতটুকু পাবে তা বুঝিয়ে দেবে এই কমিটি। দুদক চেয়ারম্যানকে এসব নির্দেশনা প্রয়োগের নির্দেশনা দেন আদালত। আইও যাতে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখা হয় দুদক চেয়ারম্যানকে সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী মীর আহম্মেদ আলী সালাম বলেন, এই জরিমানার সমুদয় টাকা ৪৫ (বি) ধারা অনুযায়ী কমপেনসেট করার জন্য, যারা নিঃস্ব হয়ে গেছে (ভোক্তা) তাদের মধ্যে এ টাকা যথাযথ বণ্টন করার কথা রায়ে বলা হয়েছে। কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে গ্রাহকরা জরিমানাকৃত অর্থের মধ্যে কে কত অংশ পাবেন।
তিনি বলেন, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত হওয়া সত্ত্বেও তারা সমবায় আইনের পরিপন্থি কাজ করেছেন। প্রতারণামূলকভাবে তারা ২০০১ সালের আইন যা ২০০৪ সালে সংশোধিত হয় সে সব লঙ্ঘন করেন। তাদের নিজস্ব বাই লজকে লঙ্ঘন করে সাধারণ সদস্য অবহিত না করে, অনুমতি না নিয়ে অবৈধ চুক্তি সম্পাদন করেন।
আইনজীবী আর বলেন, তারা এমন একটি প্যাকেজ চালু করেন, যেখানে প্রত্যেক গ্রাহক থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিতেন। যার মধ্যে ৪ হাজার ৩০০ টাকা আলাদা হিসেবে স্থানান্তরের মাধ্যমে সর্বমোট ১৯০১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অনুসন্ধানে পাওয়া যায়। তার মধ্যে মাত্র ৫৩ লাখ টাকা তদন্তের সময় অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায়। বাকি টাকা তারা মানি লন্ডারিং করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
কেআই/এমজেএফ