ঢাকা: ভুয়া ইন্স্যুরেন্স কভার নোট ও মেরিন পলিসি তৈরি করে ১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা চারটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর মামলায় ওয়ান ব্যাংক গুলশান-১ শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ এমরান হোসেনকে একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান এই আদেশ দেন।
এদিন কারাগারে থাকা আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় দুদকের পক্ষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদেশ প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।
২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা-১ কার্যালয়ে এমরান হোসেনসহ ১২ জনকে আসামি করে এই মামলা করেন। মামলার বাকি আসামিরা হলেন- ওয়ান ব্যাংক গুলশান-১ শাখার ফার্স্ট এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউল আলম, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল আদিল, সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট বিমলেন্দু চৌধুরী, এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড রিলেশনশিপ ম্যানেজার মুনতাসির রহমান সিদ্দিকী, জুনিয়র অফিসার মো. শামীম, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও শাখা হিসাব রক্ষক এ কে এম শাখাওয়াত হোসেন, আজিজুর রহমান, রাকিবা জাহান, তানভীর হোসেন, পেশোয়ারা বেগম ও সুবু তারা হাওলাদার।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অসৎ উদ্দেশ্যে এক অন্যের সহায়তায় প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গকরত: ক্ষমতার অপব্যবহার করে চারটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক হিসাবসহ অন্যান্য ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ১১ কোটি ৪০ লাখ ২৩ হাজার টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে উত্তোলন পূর্বক আত্মসাৎ করেছেন। যার মাধ্যমে আসামিরা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন। তাছাড়া এরূপ অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত উক্ত অপরাধলব্দ আয়ের উৎস গোপন করার লক্ষ্যে তা স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
যে চারটি প্রতিষ্ঠানের হিসেবে এসব টাকা স্থানান্তর পূর্বক আত্মসাৎ করা হয় সেগুলো হলো- পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, প্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
মামলা দায়েরের পর এমরান হোসেন চলতি বছর ৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী পরদিন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিন আবেদন করেন। কিন্তু আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২২
কেআই/এমএমজেড