ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২২
সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া কেন অবৈধ নয়, হাইকোর্টের রুল 

ঢাকা: সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করা বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর ২৯ ধারা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।

চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবির, চাঁদুপর বারের আইনজীবী সেলিম আকবর ও রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইয়াসিন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।

রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস, ২০০৬ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।

অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ এ বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যত দিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ব্যতীত ৩০ দিনের বেশি বলবৎ থাকবে না।

সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হওয়ার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।

শুনানিতে আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি মৌলিক অধিকারের বিরোধী। কারণ সংবিধান বলছে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে সমাবেশ করার কথা। আর অধ্যাদেশে পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা। দুটি ভিন্ন জিনিস। তাই এটি সাংঘর্ষিক।  

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে এটা (সভা-সমাবেশ) নিয়ন্ত্রিত অধিকার। আইনের দ্বারা আরোপিত বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে। দিস ইজ নট অ্যবসুলেট পাওয়ার। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।

তিনি বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষা করবে পুলিশ। অধ্যাদেশের ২৯ সেকশন হচ্ছে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে।

তখন আদালত বলেন, আবেদনকারী বলতে চাচ্ছেন ২৯ সেকশনে পুলিশকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না। বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যেমন মহানগরের বাইরে ১৪৪ ধারা দেওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২ 
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।