নীলফামারী: ডিমলা উপজেলার ডালিয়া চাপানি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বইয়ের জন্য নেওয়া হচ্ছে পাঁচশ টাকা।
ডালিয়া গ্রামের বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকরা এ অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছেলে-মেয়েকে ভর্তি করাতে তারা ডালিয়া চাপানি উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ভর্তির জন্য বাড়তি টাকা নিচ্ছে। এ ছাড়া নতুন বছরে প্রাথমিকের বই নিতে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
সুশীল চন্দ্র রায় নামে এক অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, ছোট মেয়েকে ভর্তি ও ছেলের এসএসসি ফরম পূরণের জন্য তিনি স্কুলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তার কাছে মেয়ের বইয়ের জন্য ৫০০ টাকা দাবি করা হয়। আর ছেলের এসএসসি ফরম পূরণ করতে দাবি করা হয় ২২০০ টাকা। উপায় না পেয়ে তিনি এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসিক ৩০০ টাকা হারে সুদ দেওয়ার শর্তে তিন হাজার টাকা ধার নেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার তো প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই দেয়। তাহলে বইয়ের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন টাকা নিচ্ছে?
এ বিষয়ে স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দিকেই অভিযোগের তীর ছুঁড়েছেন। তাদের দাবি, স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর কিছু কিছু শিক্ষার্থী বই নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যায়। তাই ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ টাকা আদায়ের পর তাদের বই বিতরণ করা হয়।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে ডালিয়া চাপানি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ আজাদ বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা নিয়েছি। নতুন বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। বই উৎসবের দিন যারা আসতে পারেনি, শুধু তাদের কাছ থেকে সেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২২০০ টাকা করে কেন নেওয়া হচ্ছে, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি প্রধান শিক্ষক।
অভিভাবকদের অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। সরকারি বই বিতরণ নীতিমালা অনুযায়ী এ সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে তা বেআইনি ও অপরাধ। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, বিনামূল্যের বই দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুশীল চন্দ্রের দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ধারের ব্যাপারে তিনি বলেন, তার সন্তানকে এসএসসির ফরম পূরণে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৩
এমজে