ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রেলসেতুর যন্ত্রপাতি রক্ষায় আন্দোলনের ঘোষণা শ্রমিকদের

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
রেলসেতুর যন্ত্রপাতি রক্ষায় আন্দোলনের ঘোষণা শ্রমিকদের

নীলফামারী: দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতি মাটিতে মিশে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনেও এখানে জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।

ফলে কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ছে। এটি চালু করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) এই ঘোষণা দেন সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মোখছেদুল মোমিন।

তিনি বলেন, এই সেতু কারখানায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজসহ বিভিন্ন রেলসেতু মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হতো। ব্রিজের গার্ডার, সিন্দুক, ভারী ধরনের সেতু ও ব্রিজের সব কাজ এখানে হতো। দীর্ঘদিনেও জনবল নিয়োগ না করায় ২০১৫ সাল থেকে কারখানাটি বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে মূল্যবান যন্ত্রপাতি মাটিতে মিশে নষ্ট হচ্ছে। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে মেশিনপত্রের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। কিন্তু এটি চালু করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

রেল শ্রমিক ইউনিয়ন সৈয়দপুর কারখানা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কারখানার যন্ত্রপাতি গোপনে বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা আমরা শ্রমিকরা হতে দিতে পারি না।

তিনি বলেন, সৈয়দপুরের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় সেতু কারখানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। সেতু কারখানা রক্ষা ও জনবল নিয়োগের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো আমরা শ্রমিকরা।

সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানা। কারখানাটি শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে সেতু কারখানা। এত আধুনিক মেশিনপত্র, উন্নত যন্ত্রপাতি আর ব্যাপক উৎপাদনে সক্ষম এমন কার্যকর রেলসেতু কারখানা বিশ্বের অনেক দেশে এখনও নেই। ১৮৬৫ সালে ব্রিটিশ সরকার সৈয়দপুরে রেলওয়ে যন্ত্র উৎপাদন কারখানার পাশে ১৮ একর জমিতে নির্মাণ করে সেতু কারখানা। তখন ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ তিন দেশের রেল নেটওয়ার্ক ছিল একই। বিশাল এই রেল ব্যবস্থাকে স্বনির্ভর করতে ও রেল সেবা নির্বিঘ্ন করতে গড়ে তুলে বিশাল এই কারখানা। তখন থেকে রেলওয়ের বিভিন্ন ছোট বড় সেতু, ব্রিজ, কালভার্ট সব কিছুই তৈরি হতো এই কারখানায় উৎপাদিত মালামাল দিয়ে।

কারখানার মেশিনগুলো ইংল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা, জাপান আর ফ্রান্স থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি মেশিনের দাম কয়েক কোটি টাকা করে। কোনো কোনো ভারী মেশিনের দাম আছে কয়েকশ কোটি টাকা পর্যন্ত। ১৮ একর জায়গা জুড়ে এমন মেশিন আছে শতাধিক। ৮০-৯০ এর দশকে এই কারখানা রেলের নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে উৎপাদিত মালামাল বাইরেও বিক্রি করতো। এতে রেল প্রতি বছর আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে বেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫8 ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।