ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

‘আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
‘আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই’ হারুনের মা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে শ্বশুর বাড়িতে নিহত হারুনুর রশিদ হারুনের (৩৩) হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নেমেছে তার গর্ভধারিনী মা কহিনুর বেগম। এ সময় আহাজারি করে বারবার তিনি বলছিলেন- আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।

হত্যার ঘটনায় পুত্রবধূ আমেনা আক্তার বৈশাখী ও তার শাশুড়ি খুকি বেগম এবং ভায়রা জুয়েলকে দায়ি করে তাদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

হারুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার রসুলগঞ্জ ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের নবীগঞ্জের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আবদুল মান্নান। তিনি পেশায় মাংস ব্যবসায়ী ছিলেন।

হারুন হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে জেলার সদর উপজেলার রসূলগঞ্জ বাজারে স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

এতে হারুনের মা কহিনুর বেগম, বাবা আবদুল মান্নান, বোন জোৎস্না বেগম ও শান্তা আক্তার এবং ভাই রিয়াজ হোসেন বক্তব্য দেন। এ সময় বার বার কান্নায় মূর্চা যান তারা।

নারী-পুরুষসহ সহস্রাধিক মানুষের অংশগ্রহণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- রসূলগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি তমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ব্যবসায়ী স্বপন পাটওয়ারী, সফি মাহমুদ নিজু, আবদুল মতিন, নিয়াজ, হান্নান হোসেন বাবুসহ স্থানীয় অনেকে।

বক্তারা বলেন, হারুন একজন ভালো মানুষ ছিলেন। স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে তাকে খুন করা হয়েছে। তার ভায়রা জুয়েল, স্ত্রী বৈশাখী, শাশুড়ি খুকি বেগম ও শ্বশুর মনছুরসহ ওই বাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে। আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

হারুনের মা কহিনুর বেগম বলেন, আমার ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমার বৌয়ের পরকীয়া ছিল। অন্য ছেলের সঙ্গে তার গোপন সম্পর্ক থাকার কারণে আমার ছেলের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। তার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনই খুনি। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

প্রসঙ্গত, জেলার রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামে হারিুনের শ্বশুর বাড়ি। বিয়ের ৫ মাসের মাথায় সেখানে তার মৃত্যু হলো। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে তার মৃত্যুর সংবাদ পায় পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে শ্বশুর বাড়ির একটি বাগান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। এ সময় তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে আটক করে পুলিশ।

এদিন দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। হারুনের দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় হারুনের বোন জোৎস্না বেগম বাদি হয়ে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রায়পুর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। এতে হারুনের স্ত্রী আমেনা আক্তার বৈশাখী (১৯), শাশুড়ি খুকি বেগম (৪৮) এবং ভায়রা জুয়েলসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় স্ত্রী এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তারা এখন কারাগারে আছেন। হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হারুনের ভায়রা জুয়েলকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।