ঢাকা: বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে আছে নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস। যার একটি স্বতন্ত্র অনুষঙ্গ পিঠা-পুলি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, নৃত্যগুরু আমানুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হমিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ্ আলম।
এ সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির আদি উৎসব। এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পিঠা উৎসবের কৃষ্টিকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে পিঠা উৎসব আয়োজন করেছি। আগামীতে জেলা পর্যায়ে পিঠা উৎসব করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরবর্তীতে আমরা উপজেলা পর্যায়েও পিঠা উৎসবকে ছড়িয়ে দিতে চাই। এছাড়া পিঠা উৎসব ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন উৎসব।
একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য প্রবাহেরই একটি অংশ হচ্ছে পিঠা। এ দেশের লোকসংস্কৃতিরও অংশ সবার প্রিয় এই খাদ্যটি। আর পিঠাশিল্পীদের বানানো প্রতিটি পিঠায় থাকে প্রাণের ছোঁয়া, মিশে থাকে আবেগ, এটি পৃথিবীতে বিরল।
ম হামিদ বলেন, গ্রাম বাংলার পিঠাপুলির স্বাদ ও লোক সাংস্কৃতি নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ। আমরা আগে ঘরে যে পিঠা খেতাম, সেটা এখন বাইরে চলে এসেছে। তবে এখান থেকে আমরা ঘরেও পিঠা নিয়ে যেতে পারি।
আয়োজনে বেলুন উড়িয়ে ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় অতিথি এবং আয়োজকরা পিঠাশিল্পীদের পিঠার মান ঠিক রাখা এবং প্রতিটি স্টলে রুচিশীল পরিবেশ সৃষ্টির প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে উদ্বোধনের পর থেকেই জমে উঠেছে পিঠা উৎসব। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পিঠার পসরা সাজিয়ে বসবে বিভিন্ন স্টলগুলো। ১০ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠাশিল্পীরা নান্দনিক পিঠা তৈরি, প্রদর্শনী ও বিক্রি করবেন। উৎসবে ৫০টির অধিক স্টলে পিঠার পসরা সাজানো হয়েছে।
বাহারি ডিজাইন এবং নামের পিঠাগুলো খেতে সাধারণ জনগনের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পিঠাগুলোর মধ্যে রয়েছে, দুধপুলি পিঠা, চন্দ্র পুলি, সুজির কাটলি বরফি, জামাই পিঠা, চাঁদ পুলি, পাটি সাপটা, গোলাপ ফুল পিঠা, চিকেন ফ্রাই, লবঙ্গ পিঠা, শামুল পিঠা, রসে ভরা সবজি পিঠা, পাটি সাপটা, খিরপুলিসহ প্রায় ২০০ পদের পিঠা। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পিঠা।
এদিকে একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে মেলার প্রতিদিনই চলবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। পিঠা উৎসব রকমের পিঠার সাথে উৎসব আঙিনায় প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে চলবে এই সাংস্কৃতিক পরিবেশনাগুলো। উন্মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হবে নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, কৌতুক, যাদু প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি