ফেনী: ফেনী শহর থেকে উপজেলা শহর সোনাগাজীর দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা মোটরসাইকেল থাকলেও কিছু মানুষ দূরের এই পথ হেঁটেই যাচ্ছেন।
হাঁটাহাঁটি করা এই মানুষগুলো কেউই বেকার নয়, কেউ ব্যাংকার, কেউ শিক্ষক কেউবা আবার ব্যবসায়ী। শত ব্যস্ততায়ও মানুষগুলো হেঁটে হেঁটে বহুদূর চলে যায়। সপ্তাহের কর্ম দিবসগুলোতে খুব ভোরে উঠে শহরের রাজাঝির দিঘী, বিজয় সিংহ দিঘী, কলেজ মাঠ, গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডসহ শহর জনপদ চষে বেড়ান। ছুটির দিনে সবাই মিলে জড়ো হন দূরের পথ হাঁটতে।
সুস্বাস্থ্যের জন্য এই দৌঁড়ের উপলক্ষে ছিল ‘সুস্থতার জন্য হাঁটি-স্বাস্থ্য রাখি খাঁটি’ পদ ভ্রমণ-২০২৩’। এর আয়োজক ফেনী ওয়াকিং গ্রুপ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিল জিলান অ্যাড ফেনী।
সকাল সাড়ে সাতটার আগেই বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ৩০-৩৫ জন মানুষ ফেনী শহরের শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হন। তারা জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছেন। শহীদ মিনার চত্বরে অনেক দিন পর তাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা।
প্রায় কয়েক বছর আগে ছাত্র জীবনে একসঙ্গে এ রকম হেঁটে একটা উৎসব-আনন্দের দিন কাটিয়েছিলেন তাদের অনেকে। মাঝখানে চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ায় অনেক দিন একে অন্যের সঙ্গে দেখাও হয়নি। সেই স্থবিরতা ভেঙেছে আজকের সুস্বাস্থ্যের জন্য এক সঙ্গে ২০ কিলোমিটার হাঁটাকে কেন্দ্র করে আবার একত্রিত হওয়া।
পদ ভ্রমণ উদ্বোধন করেন জ্যেষ্ঠ ব্যাংক কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম।
এ সময় অংশগ্রহণকারীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য দেন, ব্যাংকার মোসলেহ উদ্দিন, বাহার উল্যাহ, ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস, শিক্ষক বেলায়েত হোসেন, গণমাধ্যমকর্মী মাহমুদুল হাসান, শেখ আবদুল হান্নান ও ফেনী জিলান অ্যাডের মালিক আবদুল কাদের জিলানী প্রমুখ।
শুক্রকার সকাল সাড়ে সাতটায় হাঁটার বাঁশি বাজে। একসঙ্গে ৩০-৩৫ জন ২০ কিলোমিটার হাঁটা শুরু হয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে। পদ ভ্রমণে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা ফেনী শহর থেকে পায়ে হেঁটে লালপুল হয়ে দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সোনাগাজী পৌরশহরের জিরোপয়েন্ট এলাকায় এসে পৌঁছান।
২০ কিলোমিটার পদ ভ্রমণে অংশ নেওয়া ফেনী শহরের ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস বলেন, ‘পদ ভ্রমণে অংশ নিয়ে খুব ভালো লেগেছে। খুব উপভোগ করেছি। ব্যবসা করার কারনে প্রতিদিন শারীরিক ব্যায়াম করতে পারি না। আমি এখন থেকে সময় বের করে নিজের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে হাঁটবো।
ব্যাংক কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে ম্যারাথন হয়ে থাকে। কিন্তু চাকরি জন্য আমরা অংশ নিতে পারি না। আর প্রতিদিন নিয়মানুযায়ী আমরা চাকরিজীবীরা অফিসে চলে যায়। অফিস শেষে সন্ধ্যায় কান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরে আর হাঁটার-চলার মানসিকতা থাকে না। তাই আমাদের শরীরের মধ্যে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধছে।
এজন্য আমরা কয়েকজন মিলে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সুস্থতার জন্য নিজে হেঁটে অন্যকে সচেতন করতে হাঁটার উদ্যোগ নিয়েছি। সুন্দরভাবে পদ ভ্রমণ শেষ করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে। সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য দৌড় ও হাঁটা খুবই উপকারী। আমরা সবার মধ্যে হাঁটার আগ্রহ সৃষ্টি করতে চাই।
তিনি বলেন, এভাবে আমরা সবাইকে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হাঁটার জন্য উৎসাহিত করতে জেলার সব কয়টি উপজেলায় পদ ভ্রমণ করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসএইচডি/এএটি