ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কোণঠাসা ফুল ব্যবসা

কবির আবরার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
কোণঠাসা ফুল ব্যবসা

ঢাকা: ফুল ব্যবসার অবস্থা ভালো নেই। এর প্রধান কারণ হলো প্লাস্টিকের ফুল।

প্লাস্টিকের ফুলের দাম তুলনামূলক কম। একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয় না। অল্প টাকা বিনিয়োগ করে অনেক দিন এর সুফল ভোগ করা যায়। এখন বড় বড় অনুষ্ঠানগুলো সাধারণত বিভিন্ন পেশাদার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাগুলো অধিক লাভের আশায় প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করছে। যার প্রভাব পড়েছে ফুল ব্যবসায়।

ফুল ব্যবসার বর্তমান পরিস্থিতি, আসন্ন দিবসের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে এসব কথা বলছিলেন রাজধানীর শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন। শুধু মহিউদ্দীনই নয়, অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের মুখে অনেক হতাশা। অপরদিকে, ব্যবসায়ীরা টার্গেট অনুযায়ী বিক্রি করতে সক্ষম না হওয়ায় ফুল উৎপন্নকারী কৃষকরাও নায্য দাম পাচ্ছেন না।

ভালোবাসা প্রকাশ আর শুভেচ্ছা জানাতে ফুলের কদর স্বীকৃতি সর্বজনব্যাপী। বাংলাদেশেও রয়েছে ফুলের বড় বাজার। তবে সম্প্রতি কৃত্রিম বা প্লাস্টিক ফুলের কারণে অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক ফুলের চাহিদা ধীরে ধীরে কমছে। তাই আসন্ন বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে অধিক বিক্রি করে মুনাফা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা।

তারা বলেন, ফুলের পাইকারি বাজারের জন্য শাহবাগ সবসময় প্রসিদ্ধ। চাহিদা কম থাকায় আগের চেয়ে কম ফুল আসছে। দিবসকেন্দ্রিক বিক্রির আশায় তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বড় বড় অনুষ্ঠানগুলোতে এখন আর কাঁচা ফুল ব্যবহার করে না মানুষ। ছোট পরিসরে কিছু অনুষ্ঠান হয় সেগুলোতে মঞ্চ সাজানোর জন্য আর অতিথিদের বরণ করার জন্য কিছু ফুল ব্যবহার হচ্ছে। অপরদিকে বিশেষ দিবসে ফুলের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এতে প্রান্তিক চাষির তেমন উপকার হচ্ছে না। নির্দিষ্ট দিবসকে টার্গেট নিয়ে ফুল চাষ করা যায় না। যার কারণে ফুলের জোগানও কমে আসছে। বড় পরিসরের অনুষ্ঠানে সঙ্গে সঙ্গে ফুল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

ফুল ব্যবসায়ী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ফুলের ব্যবসা আগের অবস্থায় নেই। ঢাকায় জনসংখ্যা বাড়ছে। অন্যান্য সব ব্যবসার পরিধি বেড়েছে কিন্তু আমরা এ ছোট্ট দোকান নিয়ে আছি এখনো।

আরেক ব্যবসায়ী আজিজুল হক কাঁচা ফুলের পাশাপাশি প্লাস্টিকের ফুল বিক্রি করে ঠিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরাতো ফুলের ব্যবসা করি। সেটা কাঁচা হোক বা প্লাস্টিক। যখন যেটার চাহিদা তখন আমরা সেটা বিক্রি করব। তবে এখানে ক্ষতি কৃষকের। ফুলের চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফুলের চাষ কমে যাচ্ছে। একই জমিতে অন্যান্য ফসলও খুব ভালো হয় না। প্লাস্টিকের ফুলের আমদানি বন্ধ করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

জোগান কম থাকায় দিবসে ফুলের চাহিদা থাকায় ভালোবাসা দিবসের দিন ফুল বিক্রি চড়া থাকবে বলে জানাচ্ছেন ফুল পাইকারি বিক্রেতা মেহেদী হাসান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ফুলের দাম বাড়তি। গোলাপ, স্টিক, রজনীগন্ধা, জিপসিসহ সব ফুলের দাম বেড়েছে খুচরা এবং পাইকারি। গোলাপ ৫০-১০০ টাকা করে বিক্রি হবে এবার।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসকেবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।