ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অ্যাসেসম্যান্ট করতে সময় লাগবে ৪৫ দিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অ্যাসেসম্যান্ট করতে সময় লাগবে ৪৫ দিন

ঢাকা: রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি স্থিতিশীল করতে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ৪টি প্রপিং সার্পোট দেওয়া হয়েছে, এই কাজ এখনও চলমান রয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, এই ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে, না কি মেরামত করা যাবে তা জানতে অ্যাসেসম্যান্ট করতে হবে। আর এই অ্যাসেসম্যান্ট করতে কম করে হলেও ৪৫ দিন সময় লাগবে। ৪৫ দিনের আগে কোনোভাবেই ভবনটির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করে অ্যাসেসম্যান্টের কাজ করতে প্রথমেই এর কলামে এমএস (মাইল্ড স্টিল) পাইপ দিয়ে অস্থায়ী প্রপিং সাপোর্ট দেওয়ার কাজ চলছে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানিয়েছেন রাজউকের জোন-৩ ও ৫ এর অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী রঙ্গণ মন্ডল।

তিনি বলেন, আশপাশের ভবনগুলো আমরা দেখেছি, সেগুলোতে ভিম-কলামের কোনো ফেইলোর পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ভিম-কলামের ক্র্যাক দেখা গেছে। তাই সেখানে প্রপিং সাপোর্ট দেওয়ার কাজ চলছে। গত রাত ৯টা থেকে এখন পর্যন্ত ৪টি কলামের সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। ভেতরেরগুলো পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। এই মূহূর্তে সামনের অংশের বেজমেন্টে ব্লকার দিতে হবে। সেটা কংক্রিট দিয়েও হতে পারে। সার্পোট না দেওয়া হলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বৃহস্পতিবারও (৯ মার্চ) বুয়েট ও রাজউকের সমন্বয় একটি টিম ভবনটি পরিদর্শন করে গেছেন। তারাও বলেছেন, ভবনটিকে প্রথমেই প্রপিং করতে হবে। সেজন্য আমরা থার্ড পার্টি নিয়োগ করছি। গতকাল (৯ মার্চ) রাত থেকে তারা ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত কলামগুলোকে প্রপিং করে যাচ্ছে। যাতে কোনো ধরনের নতুন দুর্ঘটনা না ঘটে সেই কাজটি চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এই ভবনের কাজ করতে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা করতে হবে।   আমাদের কাজের সুরক্ষার জন্য প্রথমে ভবনের সামনের রাস্তা বন্ধ রাখতে হবে। রাস্তার একটা নির্দিষ্ট অংশ বন্ধ থাকলে আমাদের কাজের সুবিধা হবে, ঝুঁকিও থাকবে না।

ভবনটি ভাঙা হবে, নাকি মেরামত করা হবে এ বিষয়ে রাজউকের পক্ষ থেকে আজ (১০ মার্চ) একটি সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল, যা গতকাল সাংবাদিকদের বলা হয়েছিল। সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাজউকের এই প্রকৌশলী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অ্যাসেসম্যান্ট করতে হবে। তারপর আমরা জানতে পারব ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে, নাকি মেরামত করা যাবে। এই অ্যাসেসম্যান্ট করতে কম করে হলেও ৪৫ দিন সময় লাগবে। তার আগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।  

এ বিষয়ে গতকাল আমাদের কমিটির বুয়েটের টিমের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তারা জানিয়েছে এই ভবনের অ্যাসেসম্যান্টের সময়সীমা।

তিনি বলেন, অ্যাসেসম্যান্ট করার সময়সীমা পর্যন্ত ভবন ব্যবহারে সব ধরনের কার্যক্রম অবশ্যই বন্ধ থাকবে। অ্যাসেসম্যান্টের পর যদি ভবনটি ব্যবহারের উপযোগী জানা যায়, সেক্ষেত্রে রাজউকের একটি সার্টিফিকেট লাগবে। তারপরই ভবনটি ব্যবহার করা যাবে।

ভবনের নকশা ও নথি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভবন মালিকের কাছ থেকে আমরা একটি নকশা পেয়েছি। কিন্তু এই ভবনটি অনেক পুরাতন তাই এর নথি খুঁজে পেতে সময় লাগছে। নকশার নাম মিললেও তার লে-আউট মিলছে না। পরে গতকাল ভবন মালিক একটি বাণিজ্যিক ভবনের নকশা দিয়েছেন। সেই নকশাটি রাজউকের আবেদন শাখায় জমা আছে। অনুমোদনের পর ইস্যু পেলেও সেটি এন্ট্রি রয়েছে। তবে সেখানে ভবনের অনুমোদন ছিল ৫ তলা।

ভবনটি ৭ তলা, তাহলে বাকি দুটি অংশ অবৈধভাবে করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রকৌশলী রঙ্গন মন্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত তাই মনে হচ্ছে। তবে ভবন মালিকরা আরও একটি নকশা দেখিয়েছে সেটিতে ১০ তলা পর্যন্ত রয়েছে। যদিও ওই নকশায় রাজউকের কোনো অনুমোদন নেই। ভবন মালিক বলছেন, তাদের ওই নকশার অনুমোদন রয়েছে, কিন্তু সেই অনুমোদন এখনও তারা দেখাতে পারেননি।


প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের কুইন্স স্যানেটারি মার্কেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।