ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তামাকজনিত রোগেই মৃত্যু হয় পৌনে ২ লাখ মানুষের

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
তামাকজনিত রোগেই মৃত্যু হয় পৌনে ২ লাখ মানুষের

মৌলভীবাজার: বিশ্বজুড়ে তামাকজনিত রোগে বছরে প্রায় ৮০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই মারা যায় প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ।

পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর মারা যায় প্রায় ৯ লাখ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও গ্যাভি সিএসও স্টিয়ারিং কমিটির ভাইস চেয়ার ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ।

বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং (বিপিএফএইচডব্লিউ) ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন তামাক প্রতিরোধের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সুনাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। ইয়ুথ লিডার্স কনফারেন্স মৌলভীবাজার-২০২৩ শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিপিএফএইচডব্লিউ ও সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ।

সেমিনারে তামাকজনিত রোগ নিয়ে মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ। এ সময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ১৩-১৫ বছরের মধ্যে কোনো না কোনো ধরনের তামাক ব্যবহার করে। ৫৯ শতাংশ মানুষ পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। তাই কিশোর-কিশোরীদের সুস্বাস্থ্য অর্জনে ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো আকর্ষণীয় প্রচার-প্রচারণা, প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান আয়োজন, এবং কম দামে বিড়ি-সিগারেট বিক্রির মাধ্যমে তরুণ ও যুব সমাজকে টার্গেট করছে। শুধু তাই নয় অন্যের ধূমপানের কারণে পরোক্ষভাবে শিকার হয় অগণিত নারী ও শিশু। তার চেয়ে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ নেশাগ্রস্থ মানুষ প্রথমে বিড়ি-সিগারেট সেবন করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হয়। তাই শিক্ষার্থীদের ধূমপান ও তামাকমুক্ত পরিবেশে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আশে-পাশে তামাক পণ্য বিক্রি ও প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শতভাগ ধূমপান মুক্ত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন, তামাক আমাদের দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর। তরুণ শিক্ষার্থীদের অবশ্যই তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলো পরিবার-পরিজনদের কাছে তুলে ধরে তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। তাছাড়া, গ্রাম, পাড়া, মহল্লার দোকানগুলোতে তামাক কোম্পানিগুলো যেন তরুণদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন-প্রচারণা না করতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। সে লক্ষ্য অর্জনে আমাদের তরুণ সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের নিজ নিজ এলাকায় ধূমপান ও তামাক প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। তাছাড়া, বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে অবশ্যই ধূমপান ও তামাক প্রতিরোধের লক্ষ্যে সচেতন হয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজার জেলার ৩৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক ইয়ুথ লিডার অংশগ্রহণ করে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।