ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে গা-ঢাকা দেন ছিদ্দিক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে গা-ঢাকা দেন ছিদ্দিক ছেলে নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের আহাজারি, গা-ঢাকা দেওয়া ফল ব্যবসায়ী ছিদ্দিক (ইনসেটে)

রাজবাড়ী: ঋণের চাপ সইতে না পেরে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন রাজবাড়ীর ফল ব্যবসায়ী মো. ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল (৪৮)।

উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ছিদ্দিক এ তথ্য দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

গত ৪ দিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না এই ফল ব্যবসায়ীকে। শুক্রবার (৯ জুন) চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।  

ছিদ্দিক মিজি সোহেল সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নয়নদিয়া গ্রামের মো.হাশেম মিজির ছেলে।  

ছিদ্দিকের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, নিখোঁজ ছিলেন না ছিদ্দিক, তিনি গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। ঋণের চাপ সইতে না পেরে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার নাটক সাজান তিনি।

এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মূলত ঘটনাটা ছিলো সজানো নাটক। ছিদ্দিক মিজির কাছে অনেকেই টাকাপয়সা পাবেন। তিনি অনেক ঋণগ্রস্ত। ঋণের টাকা ফেরত না দিতে পেরে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। তাই তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার জন্য এই নাটক সাজান।  

মো.ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ছিদ্দিক তার বন্ধু সাঈদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে কাজটি করেন। তিনি সাঈদকে ফোন দিয়ে বলেন যে, তাকে ডিবি পুলিশ ধরেছে। পরবর্তীতে সাঈদের পরিবার থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। আমরা জিডির সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর থানায় নিয়ে আসি।  

ছিদ্দিকের আত্মগোপনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

রাজবাড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী ছিদ্দিক মিজি নিখোঁজের ব্যাপারে থানা জিডি এন্ট্রির পর দেশের প্রত্যেকটি থানায় বার্তা দেওয়া হয়। এছাড়াও জিডির সূত্র ধরে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৯ জুন সকাল ১০টায় তাকে চট্টগ্রামের বহাদ্দারহাট থেকে তাকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে মুচলেকা নিয়ে রাতেই তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উদ্ধার হওয়া ছিদ্দিক মিজি রাজবাড়ী থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এনজিও আশা, ব্র্যাক শক্তি ও ফাউন্ডেশন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যবসার জন্য ঋণ নিয়েছছি। কিন্তু ঋণের কিস্তির টাকা সময়মতো দিতে পারিনি না। যে কারণে এনজিওদের চাপে পড়েছিলাম। তাই আত্মগোপন করে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার নাটক সাজিয়েছিলাম। এ জন্য আমি অনুতপ্ত।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৬ জুন) রাত ১১ টার দিকে মো. ছিদ্দিক মিজি ওরফে সোহেল সদর উপজেলার রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাগমারা এলাকায় গেলে এরপর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন বুধবার (৭ জুন) তার বাবা মো.হাশেম মিজি সদর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। ছেলের সন্ধানে তাদের আহাজারি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।