ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি থামানো যাবে না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি থামানো যাবে না ঈদে মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সমন্বয় সভা

ঢাকা: সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে মহাসড়কের কোথাও পশুবাহী গাড়ি থামানো যাবে না বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন।

বুধবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদরদপ্তরের কনফারেন্স রুমে ঈদুল আজহা-২০২৩ উপলক্ষে মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সমন্বয় সভায় এ কথা জানান তিনি।

 

হাইওয়ে পুলিশের প্রধান বলেন, অহেতুক যদি কেউ মহাসড়কে গাড়ি থামায়, তবে তা বরদাস্ত করা হবে না। পশুবাহী গাড়ির গন্তব্য কোথায়, তা প্রতিটি গাড়ির সামনে ব্যানার লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো পশুর হাটের ভলান্টিয়ার জোরপূর্বক বা বাধা দিয়ে গাড়ি হাটে ঢোকাতে পারবে না। এজন্য পশুবাহী প্রতিটি গাড়ির সামনে ও পেছনে গন্তব্য লিখে রাখতে হবে। তাহলে কোনো ধরনের চাঁদাবাজির সুযোগ থাকবে না। যারা যাত্রী আছেন, পরিবহন সংশ্লিষ্ট আছেন, চাঁদাবাজি হবে না এটা নিশ্চিত থাকেন।  

অনেক ক্ষেত্রে পশুবাহী ট্রাকে মাদক পরিবহন করা হয়- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট নজরদারি থাকবে। মাদক কারবারিরা যাতে কোনো ধরনের সুযোগ না পায়, সেজন্য আমাদের নজরদারি ও তদারকি থাকবে।  

বিভিন্ন সংগঠনের নামের চাঁদাবাজির সমস্যা সমাধান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে, হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে দৃঢ়ভাবে বলছি- চাঁদাবাজির কোনো সুযোগ নেই, থাকবে না। যারা যাত্রী রয়েছেন, মহাসড়ক ব্যবহার করবেন, তারা একটি নিরাপদ পরিবেশ পাবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং আমরা তা বাস্তবায়ন করব। সেই সঙ্গে আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।  

এবারই প্রথমবারের মতো করা সমন্বয় সভার কার্যকারিতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, এটি তো খুবই কার্যকরী হবে। কারণ আমরা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য, হাইওয়ে পুলিশের সদস্য বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে মনে করি- আমরা আমাদের কাজটি তখনই সুন্দরভাবে করতে পারি, আমাদের যারা অংশীজন বা স্টেক হোল্ডার, সহযোগী সংস্থা, জনসাধারণ রয়েছেন, যখন তাদের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় করতে পারি।  

তিনি বলেন, সমন্বিত আলোচনার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গা ধরে ধরে, খুঁটিনাটি প্রতিটি জায়গা ধরে ধরে, চিহ্নিত করে আলোচনা করছি। সেইসঙ্গে কার কোন দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ, সেগুলো চিহ্নিত করছি এবং সমাধানকল্পে আমাদের কো-অর্ডিনেশন ও দায়িত্বগুলো চিহ্নিত করছি। আমি আশা করি, এই সমন্বয় সভাটি আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমনে এবং সুন্দর নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে।

মহাসড়ক অবরোধ করে হাটের লোকজনের বলপ্রয়োগ করে গরুর হাটে গাড়ি ঢুকিয়ে যানজন সৃষ্টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমাদের ইন্টেলিজেন্সের তথ্যমতে আমরা এই সমস্যাটি জানতে পারি। তাই আমরা জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং অন্যান্য যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছেন এবং যারা অংশীজন রয়েছেন, তারা এটা নিশ্চিত করবেন, যাতে কোনো হাটে কোনো সদস্য, সে ভলান্টিয়ার হোক বা অন্য কোনো লোকই হোক, কোনো পশুবাহী গাড়িকে জোরপূর্বক বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।  

মহাসড়কের নিরাপত্তা ও যানজটমুক্ত রাখা সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য- উল্লেখ করে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান বলেন, আমাদের একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে, আমরা সবাই মিলে (জনগণ, স্টেক হোল্ডার) ক্রমান্বয়ে প্রতি বছরই ঈদযাত্রা, মানুষের স্বস্তি ও নিরাপত্তাবাড়াতে সক্ষম হয়েছি। এবারও আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছি।

তিনি বলেন, কিছু গাড়ি সড়কে চলার সময় বিকল হয়, অল্প মেরামত করে সেগুলো চালু করা যায়। কিন্তু দেখা যায় যানজটের মধ্যে সেখানে দ্রুত পৌঁছানো যায় না। সে কারণে সারা বাংলাদেশে হাইওয়ে সংলগ্ন যত গ্যারেজ আছে, যারা এই সমস্ত যানবাহন মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান বা মেরামতকারী আছেন, তাদের একটি তালিকা আমরা তৈরি করেছি। সেগুলো আমরা সংরক্ষণ করছি, প্রতিটি কন্ট্রোল ও সাব কন্ট্রোলে তা দেওয়া আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না কোনো দুর্ঘটনা হোক। তবুও সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে আঘাতপ্রাপ্তদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা যেন করতে পারা যায়, সেজন্য হাইওয়ে সংলগ্ন হাসপাতাল এবং সব চিকিৎসা কেন্দ্রের তালিকা ও নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে যেকোনো দুর্ঘটনায় দ্রুত সাপোর্ট দেওয়া যেতে পারে।  

সব মিলিয়ে মহাসড়কে যানজট নিরসনে সবার সহযোগিতা ও সচেতনতা খুবই প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়নের সভাপতি কাওসার আহমেদ পলাশ, বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হাসানুল কবীর প্রমুখ

এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি), ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
এসজেএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।