ঢাকা: রাজধানীর কামরাঙ্গীচর থানার কোম্পানীঘাট এলাকার একটি বাসার টয়লেট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূ মেহেরুন নেছা মীমের (১৮) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাতক স্বামী সোহেল মিয়াকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১০।
র্যাব জানায়, অন্য পুরুষের সঙ্গে কথা বলে এমন সন্দেহে কলহের জেরে স্ত্রী মেহেরুন নেছা মীমকে হত্যা করে স্বামী সোহেল।
গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) পরিবারের সদস্যরা মীমকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মিমের মামা কামাল কামরাঙ্গীচর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এর প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে গাজীপুর জেলার সদর থানার সালনা উত্তর মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর লালবাগ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান।
তিনি বলেন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে স্বামীর হাতে গৃহবধু হত্যার ঘটনায় ঘাতক স্বামী সোহেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সোহেল।
সোহেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান জানান, সোহেলের সঙ্গে মীমের তিন বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সোহেল ও মীম দুজনেই স্থানীয় একটি কলম কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মীমের সঙ্গে অন্য পুরুষের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রয়েছে এমন সন্দেহে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ফলে সোহেল প্রায়ই মীমকে মারধর করতেন। সোহেলের নির্যাতনের কারণে মীম আগেও শেরপুর আদালতে সোহেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
এরপরও তার ওপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী সোহেল। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে কামরাঙ্গীরচর থানার জামাল দেওয়ানের গলিতে নানির বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেই মীম ও তার মা মিলে নানির সঙ্গে বসবাস করতেন।
মিমকে হত্যার ১০ থেকে ১২ দিন আগে সোহেল কামরাঙ্গীচরে নানির বাসায় আসেন। মীমকে আর কোনোদিন কোনো প্রকার নির্যাতন করবেন না বলে মীম ও তার পরিবারকে কথা দিয়ে নানির বাসায় বসবাস করতে থাকেন।
সেই সঙ্গে মীমকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। পরবর্তীতে গত ১৫ আগস্ট দেড়টার দিকে সোহেল বাথরুমে গিয়ে মীমকে ডেকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পরে গাজীপুরের সালনা এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করেন সোহেল। যেখান থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার সোহেলকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
পিএম/জেএইচ