ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এ বিচার একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে: ‘নির্যাতিত’ হওয়া সেই ফুলপরী

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
এ বিচার একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে: ‘নির্যাতিত’ হওয়া সেই ফুলপরী

ইবি: দেশব্যাপী আলোচিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরী খাতুন নামের এক নবীন শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন।

তিনি বলেন, তারা আমার সঙ্গে যেই নির্যাতন করেছে, তার উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে। এ বিচার একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।

ফুলপরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। অন্যায়ের ন্যায়বিচার হয়েছে। একইসঙ্গে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা চাই।

সোমবার (২১ আগস্ট) উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিন্ডিকেট সভার সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজকে ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক পর্যালোচনা করে সিন্ডিকেটে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হলেন ইবি শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।

এর আগে, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ফুলপরী খাতুন নামের এক নবীন শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার চার সহযোগীর বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, হল কর্তৃপক্ষ, শাখা ছাত্রলীগ ও হাইকোর্ট পৃথক পৃথক চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রতিটি তদন্ত প্রতিবেদনে এ নির্যাতনের সত্যতা মেলে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় গত ১ মার্চ বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের নির্দেশনায় দোষী সাব্যস্ত পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি ছাত্রলীগ থেকেও তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর গত ১২ জুন ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আত্মপক্ষ সমর্থনে শেষবারের মতো সাক্ষাৎকার দিতে ক্যাম্পাসে আসেন তারা।

পরে ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাইকোর্টের প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোর্ড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এ সময়ের মধ্যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া পদক্ষেপ পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট এক নির্দেশনায় পদক্ষেপগুলো ‘যথেষ্ট ও বিধিসম্মত নয়’ বলে মন্তব্য করে গৃহীত শাস্তি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পুনরায় শাস্তি নির্ধারণ করার নির্দেশ দেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্টের বিধি ১ এর ৪, ৫, ৭ ধারা এবং বিধি ২ এর ৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তি নির্ধারণ করে আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। সর্বশেষ সোমবার অনুষ্ঠিত এই জরুরি সিন্ডিকেটের অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।