ঢাকা: মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকার রাসেল খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি শেখ রহমানকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১০।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার উত্তরা পশ্চিম এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, রাসেল খানকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি শেখ রহমান। সে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার রুদ্রপাড়া এলাকার মৃত শেখ তফির ছেলে। তার বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, রাসেলের স্ত্রীর বড় ভাই গ্রেপ্তার আসামি রহমান। রহমান বেশ কিছুদিন ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। যার ফলে সে মাদক সেবনের অর্থ জোগাড় করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। রাসেল বিষয়টি রহমানের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে। রহমানকে চিকিৎসার জন্য একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠায়। যার কারণে রহমান রাসেলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। পরে রহমান গত ৩ সেপ্টেম্বর মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকো চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে আসে এবং সে ৪০ দিনের জন্য চিল্লায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। চিল্লায় যাওয়ার কথা শুনে তার পরিবারের লোকজন অনেক আনন্দিত হয়। বিষয়টি শুনে রাসেল চিল্লায় যাওয়ার জন্য রহমানকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে।
পরে গত ১১ সেপ্টেম্বর রহমান চিল্লায় যাওয়ার কথা বলে তার প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী রাসেল মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন রুদ্রপাড়া এলাকায় তার খালু শ্বশুরের টিনের বসতঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে রহমান তাকে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করার জেরে পরিকল্পিতভাবে কৌশলে ঘরের জানালা ভেঙে ওই ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে এবং তার কাছে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় রাসেলের মাথায় কোপ দেয়। এতে রাসেলের গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। রাসেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় রহমান।
পরে রাসেলের পরিবারের লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মৃত রাসেলের পরিবারের লোকজন দোহার থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। মরদেহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ হত্যাকাণ্ডের পর রাসেলের বাবা রশিদ খান (৮১) মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানায় শেখ রহমানের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।
গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ