ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে ভোজ্য তেল-জ্বালানি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে ভোজ্য তেল-জ্বালানি

কক্সবাজার: কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারে পাচার করা হচ্ছে জ্বালানি ও ভোজ্য তেল। টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বিশেষ করে ভোজ্য তেল, অকটেন ও পেট্রোল নৌ পথে পাচার করা হচ্ছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।  

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ বলছে, বেশ কিছুদিন ধরে এভাবে কক্সবাজার থেকে সাগরপথে মিয়ানমারে জ্বালানি ও ভোজ্য তেল পাচার হচ্ছে। অধিক লাভের  সুযোগে উপকূলীয় এলাকার অনেকে এই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন।

র‌্যাব-১৫-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (ল অ্যান্ড মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর সেতুর ওপর বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় টেকনাফ অভিমুখী দুইটি পিকআপভ্যান থেকে ৬৯টি প্লাস্টিক কনটেইনারে থাকা দুই হাজার ৯০০ লিটার অকটেন জব্দ করা হয়। এ সময় পাচারকারী সন্দেহে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে র‌্যাব জানায়, উখিয়ার একটি তেলের পাম্প থেকে এসব অকটেন ১৩৫ টাকা প্রতি লিটার কিনে মিয়ানমারে পাচারের জন্য নেওয়া হচ্ছিল। মিয়ানমারে এগুলো বিক্রি হয় প্রতি লিটার ৩০০ টাকায়।

আটক ছয়জন হলেন উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের সোনারপাড়ার বাসিন্দা মো. আয়াছ ওরফে রিয়াজ (২২), মো. জসিম উদ্দিন (২০), আলী আকবর (৩৮), মো. সোহেল (১৯), মো. এহাছান উল্লাহ ওরফে রহমত উল্লাহ (২৩) ও রামুর হিমছড়ির বাসিন্দা মো. দেলোয়ার (২৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটক সন্দেহভাজন পাচারকারীরা বলেছেন, পরস্পরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে তারা জ্বালানি তেল মিয়ানমারে পাচার করে আসছিলেন। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে পাইকারি দামে অকটেন কিনতেন তারা। আটক ছয়জন র‌্যাব হেফাজতে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওসমান গণি বাংলানিউজকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে জ্বালানি ও ভোজ্য তেল মিয়ানমারে পাচার হয়ে আসছে। বিষয়টি জানার পর পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারে পাচারের সময় দুই দফার বিপুল পরিমাণ জ্বালানি ও ভোজ্য তেলের চালান জব্দ করেছে পুলিশ।

টেকনাফের একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, লিটার প্রতি ১৩৫ টাকা কিনে মিয়ানমারে বিক্রি করা হচ্ছে ৩০০ টাকায়। অধিক লাভের কারণে এলাকার অনেকেই জ্বালানি ও ভোজ্য তেল পাচারে জড়িয়ে পড়ছেন।

তারা জানান, ওই এলাকার বড় ডেইল, শীলখালী, জাহাজপুরা, হাজমপাড়া, মারিশবুনিয়া, নোয়াখালীপাড়া, মহেশখালীয়াপাড়া, হাবির ছড়া, করাচিপাড়াসহ বিভিন্ন স্থান দিয়ে নৌপথে জ্বালানি ও ভোজ্য তেলের চালান মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে।

জানা গেছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মিসহ কয়েকটি বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। যে কারণে দেশটির অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমনকি পশ্চিম আরাকানের (রাখাইন রাজ্য) বন্দর শহর মংডুর সঙ্গে জেলা ও বিভাগীয় শহর আকিয়াব এবং রাজধানী ইয়াংগুনের যোগাযোগ রক্ষাকারী সড়কও বিচ্ছিন্ন আছে। এসব কারণে পণ্যসামগ্রী পরিবহনে গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। পশ্চিম আরাকানসহ আকিয়াব, ভুচিদং, রাশিদং ও মংডু এলাকায় নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
এসবি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।