ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিশ্ব যুব উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বাংলানিউজের সাগর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
বিশ্ব যুব উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বাংলানিউজের সাগর

ঢাকা: আগামী ১ থেকে ৭ মার্চ রাশিয়ার সিরিয়াস ফেডারেল টেরিটরিতে (সোচি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব যুব উৎসব বা ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভ্যাল। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের নিজস্ব প্রতিবেদক হোসাইন মোহাম্মদ সাগর।

রাশিয়ায় আয়োজিত এ উৎসবে এবার বিশ্বের ১৮০টি দেশের ২০ হাজার যুব প্রতিনিধি ও ডিপ্ল্যোম্যাট অংশ নিচ্ছেন। এতে বাংলাদেশ থেকে সাগরের সাথে অংশ নিচ্ছেন আরও ৯৪ জন। তারা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

এই ৯৫ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৩২ যুব প্রতিনিধি বিশ্ব যুব উৎসবের মূল প্রোগ্রাম শেষ করে অংশ নেবেন রুশ সরকারের বিশেষ আমন্ত্রণ হিসেবে এই উৎসবের আরেক আয়োজন রিজিওনাল প্রোগ্রামে। এই আয়োজনে সমগ্র বিশ্ব থেকে মোট ২ হাজার যুব প্রতিনিধি অংশ নেবেন। ৭ মার্চ উৎসবের মূল প্রোগ্রাম শেষে যখন সবাই দেশে ফিরবেন, তখন রিজিওনাল প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে সাগরসহ বাংলাদেশের ৩২ জন যুব প্রতিনিধি রাশিয়ার ত্রিশটি অঞ্চলে একটি ফ্রি ট্যুর পাবেন। এই ট্যুরটি ১৭-১৮ তারিখ মস্কোয় এসে শেষ হবে এবং সেখান থেকে পরবর্তীতে তারা দেশে ফিরবেন।

এর আগে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে এই অংশগ্রহণকারীরা  উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেন। সেখানে তারা নিজেদের কর্মদক্ষতা, এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস, সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তি, সামাজিক কার্যক্রম ও শিক্ষাগত যোগ্যতাগুলো তুলে ধরেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেন। সেখান থেকে তাদের সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ বিচারকগণ বৈশ্বিকভাবে মার্কিং করেন। এরপর পয়েন্টের ভিত্তিতে তাদের অংশগ্রহণ, ফুল ফান্ডেড ট্রিপ, রিজিওনাল প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া এবং পার্শিয়াল ফান্ডের বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়। এই আয়োজনে অংশগ্রহণের জন্য এবার বিশ্বের ১৮৮টি দেশ থেকে ৩ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়ে।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে হোসাইন মোহাম্মদ সাগর বাংলাদেশের তরুণ যুব নেতা হিসেবে রাশিয়ার ‘নিউ জেনারেশন প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সে সময় তিনি মস্কোয় নিউ জেনারেশন প্রোগ্রাম এবং অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব যুব উৎসব কীভাবে আরও সুন্দর করা যায় এবং তরুণদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করা যায়, তার গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপায় তুলে ধরেন। এ সময় তিনি ১২ দেশের ৪৮ তরুণ নেতাসহ রাশিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে এ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ নিয়ে সাগর বলেন, এই উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমার বিশ্বাস, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যুব নেতা ও ডিপ্লোম্যাটদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আমি নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারব। এছাড়া এই উৎসব বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরার একটি সুবর্ণ সুযোগ। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো বিশ্ব দরবারে আমাদের দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে। আমি বিশ্বাস করি, এই উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বের যুব সমাজ একত্রিত হতে পারবে এবং বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করতে পারবে।

বিশ্ব যুব উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাওয়ায় সাগরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক জুয়েল মাজহারসহ তার সব সহকর্মী। এ বিষয়ে সাগর বলেন, আমি কৃতজ্ঞ পুরো বাংলানিউজ পরিবারের প্রতি, যারা আমাকে এ সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি আশা করি, এই উৎসবে আমার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলানিউজের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করতে পারবো। এছাড়া ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস, রাশিয়ান হাউজ এবং ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল প্রিপারেটরি কমিটির প্রতিও বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ; তারা আমাকে এই উৎসবে অংশগ্রহণ, আমার প্রস্তুতি ও যাত্রার জন্য সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন।

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত কুষ্টিয়ার সন্তান। তার গ্রামের বাড়ি মিরপুর উপজেলার আমলায়। সাগরের বাবা মো. সামসুল হক একই উপজেলার কুশাবাড়ীয়া-চরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। সাগরের মা মোছা. মাহফুজা বেগম (মৃত) এবং মোছা. নূরজাহান গৃহিনী।

সাগর ২০১৭ সালের জুলাইয়ে বাংলানিউজে যোগ দেন। এরপর থেকে শুরু সাগরের নতুন অধ্যায়। বাংলানিউজের হয়ে দেশের এ-মাথা থেকে ও-মাথা চষে বেড়িয়েছেন তিনি। বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে গিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে। কাজের বিষয়ও বহুমাত্রিক। এক কথায়, রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বভুক। তার সম্পর্কে সহকর্মীদের শংসাবাক্য, অফিসের কোনো অ্যাসাইনমেন্টেই সাগরের না নেই। তার ব্যাকপ্যাক সবসময় রেডি থাকে, বলামাত্রই সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে মিষ্টি হেসে বেরিয়ে পড়বেন।

ছোটবেলা থেকেই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ছেলেটি সাংবাদিকতার পাশাপাশি সৃজনশীল লেখালেখি এবং সামাজিক কাজের সঙ্গেও দারুণভাবে সম্পৃক্ত। তিনি ২০২১ সালে ইস্পাহানি মির্জাপুর চা আয়োজিত গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। ২০১৯ সালে রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক শেষ করেন তিনি। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সাগরের লেখা পড়ানো হয়েছিল।

সাংবাদিকতায় ২০১১ এবং ২০১২ সালে ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন সাগর। ২০২২ সালেও তার রিপোর্ট মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়। লেখালেখি ও সাংবাদিকতার জন্য ‘কাঙাল হরিনাথ মজুমদার সম্মাননা স্মারক’ও পেয়েছেন সাগর। তার সম্পাদনায় কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হয় সাহিত্যের কাগজ ‘তিথিয়া’।

বর্তমানে দেশের কৃষি ও জলবায়ু বিষয়ক সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম সামাজিক সংগঠন ‘কৃষকের বাতিঘর’র উদ্যোক্তা এবং প্রতিষ্ঠাতা হোসাইন মোহাম্মদ সাগর। সংগঠনটি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘কমিউনিটি সলিউশন প্রোগ্রামে’ বিশ্বের ৯৫টি দেশের সাত হাজার ৮৯২টি সংগঠনের কার্যক্রমের মধ্যে প্রথম ৪০০তম স্থান পেয়েছে। এছাড়া তিনি মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের একজন সদস্য হিসেবে মঞ্চ নাটকের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
এইচএমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।