ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশের চাকরি পেয়ে ৫৫ তরুণ-তরুণীর পরিবারে ঈদের খুশি

নরসিংদী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৪
পুলিশের চাকরি পেয়ে ৫৫ তরুণ-তরুণীর পরিবারে ঈদের খুশি

নরসিংদী: নরসিংদীতে ১২০ টাকায় পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট পদে চাকরি পেলেন ৫৫ জন তরুণ-তরুণী। নিজেদের মেধা ও যোগ্যতা বলে ১৮৪২ জনকে পেছনে ফেলে আদায় করে নিয়েছে স্বপ্নের পুলিশের চাকরি।

কোনো ঘুষ ও দালাল চক্র ছাড়া নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে খুশি তরুণ-তরুণীরা। তাদের পরিবারে ঈদের আগেই বিরাজ করছে ঈদের খুশি। জেলা পুলিশ বলছে খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হয়েছে।
 
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ লাইনে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে উর্ত্তীণ ৫০ জন তরুণ ও ৫ জন তরুণীর নাম ঘোষণা করেন নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নরসিংদীর ছয়টি উপজেলা থেকে ৫৫টি কনস্টেবল পদের বিপরীতে ১ হাজার ৮৪২ জন বেকার তরুণ-তরুণীর আবেদন যাচাইবাছাই, শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা শেষে ৪৯৪ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরপর  ১২০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ২ টাকায় আবেদন ফরম দিয়ে গত ২৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় ১০১ জন উর্ত্তীণ হয়। সেখান থেকে ৫৫ জন মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়। আর অপেক্ষায় আছে ৫ জন।

পুলিশের চাকরি পাওয়া সবাই গরিব ঘরের সন্তান। তারা কেউ ভাবেনি টাকা ছাড়া মেধার যোগ্যতায় পুলিশে চাকরি পাবে। জীবনের প্রথম সরকারি চাকরি পেয়ে তারা আবেগ আাপ্লুত। রায়পুরা এলাকার মরজাল গ্রামের সাব্বির খান বলেন, মানুষ বলতো টাকা ছাড়া চাকরি হবেনা, লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। কিন্তু আমি কোনো ঘুষ না দিয়ে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি। তাই দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো।

নরসিংদী শহরের সাহেপ্রতাপ এলাকার তানজিনা আক্তার বলেন, আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল পুলিশে চাকরি করবো। সে জন্য আবেদন করি ও জীবনের প্রথম পরীক্ষায় টিকে যাই। মেয়ে হিসেবে নিজেকে স্বাবলম্বী করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। ঈদের আগে আমার চাকরির খবরে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারে এখন ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে। সবার এ খুশি ধরে রেখে আমি সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করতে চাই।

ছেলে মেয়েদের এ সাফল্যে আনন্দ অশ্রু ঝরছে অভিভাবকদের। মনোহরদী উপজেলার বড়চাপা গ্রামের শরিফ পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তার বাবা বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের পরিবার ছেলের চাকরি পাওয়াতে খুবই খুশি। কোন ঘুষ না ছাড়াই ১২০ টাকায় ছেলে চাকরি পেয়েছে। যা আমাদের মত গরিব পরিবারের জন্য আশার আলো জ্বালিয়েছে। এত স্বচ্ছ ও সুন্দর নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমরা জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানায়।

নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তরুণ-তরুণীরা পরীক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখে চাকরি আদায় করে নিয়েছে। কেউ যেন কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন আর দালাল চক্রের প্রলোভনে না পড়ে জেলা পুলিশ সবসময় সতর্ক ছিল। উত্তীর্ণ সবাইকে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দেশসেবার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।