ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সড়ক যেন নদী

অতিথি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে সড়ক যেন নদী

সাভার (ঢাকা): টানা তাপদাহ শেষে অবশেষে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে। তবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের কিছু অংশ।

 

বৃষ্টি হলে সড়কটি যেন পরিণত হয় নদীতে। এতে ভোগান্তি বাড়লেও বৃষ্টিতে খুশি স্থানীয়রাসহ খেটে খাওয়া মানুষ। বছরের পর বছর ধরে তারা এমন ভোগান্তিতে অভ্যস্ত হয়েছে বলে জানান তারা।

শনিবার (১১ মে) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আব্দুল্লাহপুর -বাইপাইল সড়কের ইউনিক বাসস্ট্যান্ড থেকে জামগড়া পর্যন্ত সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সড়কটিতে বৃষ্টি না হলেও কলকারখানার পানি জমে থাকে মাসের পর মাস। ভোগান্তি যেন নিত্যদিনের সঙ্গী এই পথে চলাচল করা মানুষদের। এছাড়া সকালের বৃষ্টিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারে পানি জমলেও তা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিষ্কাশন হয়ে যায়।  

এই সড়ক দিয়ে প্রায় ৮ বছর ধরে চলাচল করেন বাশার আহমেদ।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘চাকরির সুবাদে আমি এই সড়কটি দিয়ে প্রায় ৮ বছর ধরে বাইপাইল থেকে নিশ্চিন্তপুর এলাকায় যাতায়াত করছি। সড়কটিতে বেশিরভাগ সময়ই পানি জমে থাকে। বৃষ্টি হলে তো যাতায়াত করা খুব মুশকিল হয়ে যায়। রিকশা-ভ্যানে যাতায়াত করাটাও কষ্টের। অন্যান্য গাড়ির চাকার পানি ছিটকে এসে জামাকাপড় নোংরা হয়ে যায়। বেশির ভাগ সময় দুই সেট কাপড় নিয়ে বের হতে হয়। এমনিভাবেই চলছে ৮ বছর।  

পোশাকশ্রমিক মো. তাজু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের ইউনিক থেকে জামগড়া পর্যন্ত সড়কের একেবারে খারাপ অবস্থা। পানি জমে থাকার কারণে সড়কের ওই অংশের পিচঢালা সড়কের পরিবর্তে হয়েছে ইট সলিং সড়ক। খানাখন্দের অভাব নেই। রিকশা-ভ্যান উল্টে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমনটা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। কিন্তু দেখার যেন কেউ নাই। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্পে ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ সড়কটি মেরামত করা হবে বলে শুনেছি। এমনটা হলেও এখানকার মানুষের আরও প্রায় ৫ বছর ভোগান্তি নিয়েই চলাচল করতে হবে। ’ 

স্থানীয় ফার্নিচার ব্যবসায়ী মেহেদী বাংলানিউজকে বলেন, ‘দোকানের সামনে প্রায় হাঁটুপানি সব সময় থাকে। এতে করে ব্যবসায় ধস নেমে গেছে। গত ৫ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে। আর কত দিন যে সহ্য করতে হবে এটা জানা নেই। এমনভাবে চলতে থাকলে ফকির হয়ে যাব। কলকারখানার পানি সড়কটিতে ফেলা হয়। ফলে প্রায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। তাতে বৃষ্টি হলেই সড়কটি পরিণত হয় নদীতে। দ্রুত এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চায় এখানকার ব্যবসায়ীরা। ’ 

আলীনূর পরিবহনের চালক মাহবুব বলেন, ‘এমনিতেই সড়কটিতে যানজট লেগেই থাকে। তাতে আবার বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় সড়ক। খুব সাবধানে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হয়। আমরা প্রায় সময়ই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। অভ্যস্ত হয়ে গেছি, যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি একটু বেশি। নোংরা পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে বাসে কিংবা গন্তব্যে যেতে হয় তাদের। সড়কটির এই অংশে ভোগান্তির সীমা নেই। ’

সাভার পরিবহনের চালক হানজালা বলেন, সকালের বৃষ্টিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারেও পানি জমেছিল। কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকায় দ্রুত পানি নিষ্কাশন হয়েছে। আর বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে এই পানি থাকবে মাসের পর মাস। এজন্য ওই রুট পরিবর্তন করে এখন ঢাকা-আরিচা রুটে গাড়ি চালাই।

এ ব্যাপারে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সড়কটিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলমান। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের লোকজন কাজ করছে। প্রয়োজনে পাম্প দিয়ে সড়কের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। সড়কটির ওপরে বিভিন্ন পোশাক কারখানা পানি ফেলে। যে কারণে ওই অংশে পানি জমে থাকে। এছাড়া সড়কটিতে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।