ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জামিন বেরিয়েই বিচারকের নামে বেফাঁস মন্তব্য সেই আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যানের 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৪
জামিন বেরিয়েই বিচারকের নামে বেফাঁস মন্তব্য সেই আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যানের 

পটুয়াখালী: পটুয়াখালী জেলার বাউফলে নির্বাচনকালীন এক শিক্ষককে মারধর ধরের ঘটনায় জেল হাজত থেকে জামিনে বেরিয়ে বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে ফের আলোচনায় এসেছেন কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এ সংক্রান্ত বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

এর আগেও সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধাসহ একাধিক মানুষকে মারধর করে এবং সালিশ বিচারে গিয়ে অন্যের প্রেমিকাকে জোর করে বিয়ে করে দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছিলেন চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে। জেলও খেটেছেন একাধিকবার।

সম্প্রতি ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পূর্ব মুহূর্তে উপজেলার বীরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করেন শাহিন হাওলাদার। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জেল হাজত থেকে বের হয়ে স্থানীয় একটি বাজারে জনসাধারণের মধ্যে বক্তব্যকালে তিনি পটুয়াখালীর বিজ্ঞ আদালত ও একজন বিজ্ঞ বিচারককে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেন।

জামিনে বেরিয়ে ওই ভিডিও বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, নির্বাচনের সময় আমাকে ষড়যন্ত্র করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দিতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমার নেতা আসম ফিরোজ এমপির হস্তক্ষেপের কারণে তারা সফল হয়নি। ওইদিন হোম মিনিস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাকে ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল থেকে বের করা হয়। পরে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে আশিকুর রহমান সাহেব আমাকে সাজা দিতে এসেছিলেন পরে ওনার আদালতেই আমার মামলা ছিল।

ভিডিওতে তাকে আরও বলতে শোনা যায়, গত  বৃহস্পতিবার আমার জামিন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান যখন আমাকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানান, এরপর রোববারেই তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।  

এসময় ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে ষড়যন্ত্রকারী ও অর্থলোভী বলেও বক্তব্য দেন এই চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, আমাদের দলের যারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত তারা সাবধান হয়ে যান।  

চেয়ারম্যান শাহিনের বক্তব্যের ভিডিওক্লিপটি এখন স্থানীয়ভাবে ভাইরাল।  

এ বিষয়ে আইনজীবীরা বলছেন, জনসম্মুখে বিজ্ঞ আদালত নিয়ে কোনো ধরনের মনগড়া বক্তব্য একটি বিভ্রান্তি ও আদালত অবমাননার শামিল।

পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির সদস্য আল আমিন হাওলাদার বলেন, বিজ্ঞ আদালত নিয়ে শাহিন হাওলাদারের বক্তব্যটি আমি শুনেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মনগড়া এবং বিভ্রান্তিমূলক। এটি সুস্পষ্ট আদালত অবমাননার শামিল।

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা শাহিন হাওলাদারের বক্তব্য এখন পর্যন্ত পাইনি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তার বর্তমান দায়িত্বে বহাল আছেন এবং তার কোনো বদলি হয়নি।

এ বিষয়ে মো. শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘ওই বক্তব্য আমার না, কেউ হয়ত এক্সপার্ট লোক দিয়ে এডিটিং করে ভিডিওটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। ’

এদিকে জামিনে বেরিয়েই পুনরায় মামলার বাদী ও ভিকটিম সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামের ভাই এরশাদ হোসেনকে বাড়ি-ঘর ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এই চেয়ারম্যান শাহিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বাউফল থানায় গত ১৩ জুন একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।