ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়া রণক্ষেত্র, নিহত ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
বগুড়া রণক্ষেত্র, নিহত ২

বগুড়া: বগুড়ায় চলমান অসহযোগ আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেশকয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

রোববার (০৪ আগস্ট) দুপুরে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক যুবক মারা যান। সদর উপজেলায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানেও একজন নিহত হন।  

দুপচাঁচিয়া উপজেলায় নিহত এক যুবকের নাম মনিরুল ইসলাম। তার বাড়ি কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায়। বগড়া সদরে নিহত অন্যজনের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. শামসুন্নাহার বলেন, মুনিরুলের মাথায় গুলি লেগেছিল। এ কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

সদর উপজেলায় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিন নম্বর রেল গুমটি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত যুবকের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই যুবক নিহত হয়েছে। আমরা ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছি। এছাড়া আরও ৭-৮ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের কেউ গুলিবিদ্ধ কেউ আঘাতপ্রাপ্ত।

সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, আমাদের হাসপাতালে দুইজন আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন।

বগুড়ায় সকাল থেকেই অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থকদের সঙ্গে প্রথমে আওয়ামী লীগ ও পরে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় আন্দোলনকারীরা বগুড়া টিএনটি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।  

এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেয়। এসময় আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় প্রবেশের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাতমাথা চত্বর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এরপর তা আন্দোলনকারীরা দখলে নেয়। এসময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা ধাওয়া খেয়ে সাতমাথা ত্যাগ করে। সাতমাথা চত্বর দখলে নেওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থাপনা এবং সড়কে থাকা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেসময় পুলিশ সার্কিট হাউস রোডে পুলিশ প্লাজার সামনে অবস্থান নেয়।  

আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় অগ্নিসংযোগ শেষে পিডিবি রোড হয়ে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এবং সার্কিট হাউস রোড হয়ে ফুল মার্কেটের সামনে গিয়ে পুলিশের ওপরে ককটেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় পুলিশ টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সাতমাথা থেকে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দিয়ে বিভিন্ন সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলতে থাকে। আন্দোনলকারীরা স্টেশন রোড, শেরপুর রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক ও গোহাইল রোড থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে থাকে। বেলা পৌনে ২টার দিকে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।