ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কমলগঞ্জে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কমলগঞ্জে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর চারটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

বন্যায় উপজেলার প্রায় ১৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকেই ধলাই, লাঘাটা, ক্ষীরণী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। ফলে পাহাড়ি ছড়ার পানি উপচে ধলাই নদীতে পড়তে শুরু করে। সোমবার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিকেল থেকে ধলাই নদীর বাঁধ ভাঙন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত নদীর চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।  

উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ সদর, আলীনগর, শমশেরনগর, পতনঊষার, মুন্সিবাজার, রহিমপুর এবং পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পরে পুরো উপজেলার সব কটি ইউনিয়নে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল। সেগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগি নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। মাঠে ঘাটে ক্ষেতে পানি উঠায় চরম গো খাদ্য সংকটে পড়ছেন তারা।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইসলামপুরে ২০টি গ্রাম, আদমপুরে ২০টি, শমশেরনগরে ২০টি, মুন্সিবাজারে ২৬টি, পতনঊষারে ১৬টি, আলীনগরে ১৬টি, রহিমপুর, সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার আরও প্রায় ২৫টি গ্রাম বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কৃষকদের রোপিত বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেত ও শাকসবজি নিমজ্জিত হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটও রয়েছে।

শমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও পতনঊষার ইউনিয়নে বন্যার অবনতি হচ্ছে। ফলে পুকুর ও মৎস্য খামার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মাছ চাষিরা। বুধবার উপজেলার স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারে নগণ্য ছিল। পানিবন্দি থাকায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, কমলগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারিভাবে ৬০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও শুকনো খাবার বিতরণের জন্য নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজনীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। বরাদ্দ এসেছে, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুকনো খাবা বিতরণও শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৪
বিবিবি/                                  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।