ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মাদারীপুরে হাসিনা-সাবেক ৪ এমপিসহ ৭০০ জনের নামে হত্যা মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৪
মাদারীপুরে হাসিনা-সাবেক ৪ এমপিসহ ৭০০ জনের নামে হত্যা মামলা

মাদারীপুর: মাদারীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাওহীদ সন্ন্যামাত (২১) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুরের সাবেক চার এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

রোববার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় কামরুল হাসান নামে সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে ৯২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়।  

নিহত তাওহীদ সন্ন্যামাত সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামে সালাউদ্দিন সন্ন্যামাতের ছেলে। তিনি বিভিন্ন এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান খান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিস, আবদুস সোবহান গোলাপ, নূর-ই আলম চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে।  

এ ছাড়াও অন্য আসামিদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান, সাবেক চেয়ারম্যান, শাজাহান খানের ভাই ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ অন্যরা।

মামলার এজাহার ও পুলিশের সূত্র জানায়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মস্তফাপুর গোল চত্বর থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। খাগদী বাসস্ট্যান্ডের দিকে এলে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে গুলি ছোড়া হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তাওহীদ ও রোমান নামে দুইজন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত শনিবার রোমানের স্ত্রী কাজল আক্তার বাদী হয়ে ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। তবে সেই মামলায় শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ কোনো নেতা আসামি ছিল না। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এই হত্যায় জড়িত বলে বাদী উল্লেখ করেন।  

এরপর রোববার মধ্যরাতে সংক্ষুব্ধ হয়ে কামরুল হাসান নামে এক ব্যক্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মাদারীপুরের সাবেক চার এমপিসহ ৭০০ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেছেন। ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়ার ঘটনায় মাদারীপুরে এ নিয়ে দুটি মামলা হলো। এ ছাড়া মাদারীপুরে ছাত্র আন্দোলনে প্রথম নিহত দীপ্ত দের পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি।

রাজনৈতিক এই মামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে এই মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা নেই।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত তাওহীদ সন্ন্যামাতকে হত্যার ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়ে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। নিহতের পরিবারের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯২ জনকে এজাহারভুক্ত ও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলাটি পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ