ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে ইলিশ সিন্ডিকেটে বাড়ছে দর, ভোক্তাদের ক্ষোভ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
ফরিদপুরে ইলিশ সিন্ডিকেটে বাড়ছে দর, ভোক্তাদের ক্ষোভ 

ফরিদপুর: আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ইলিশের বাজার দর নিয়ন্ত্রণের প্রত্যাশা ছিল ভোক্তাদের। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে এখনও চলছে আগের মতোই।

ফলে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত মূল্যে ইলিশ কিনতে পাচ্ছেন না ফরিদপুরের ভোক্তারা।  

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণায় ইলিশ পাচারকারী চক্র ভয়ভীতিতে থাকলেও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভোক্তা সাধারণ।  

ফরিদপুর শহরের হাজি শরীয়াতুল্লা মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ খুচরা মাছ ব্যবসায়ীর কাছে রয়েছে ছোট বড় নানা রকমের ইলিশ। তবে আগের মতোই চড়া। এতে ইলিশ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।  

বর্তমান সরকারের হুঁশিয়ারিতে ভারতে ইলিশ পাচার কমে এলেও এখনও ফরিদপুরে বাজারগুলোতে এর প্রভাব পড়েনি। জেলার অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রক সিন্ডিকেট এখনও ইলিশের চড়ামূল্য ধরে রেখেছে। কৃত্রিম উপায়ে মজুদের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

ফরিদপুরের বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা রেজাউল করিম, রোকেয়া বেগম, সাইদা আক্তার ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, শুনেছি ইন্ডিয়ায় ইলিশ যাচ্ছে না। তাহলে ইলিশের মৌসুমেও দাম বেশি কেন।

তারা জানান, বাজারে এসে দেখি দাম আগের মতই আছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ইলিশ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বাজারে মাছ ব্যবসায়ী পরিমল কুমার দাস বলেন, সাগর বা নদীতে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। তাই বাজার দরও একটু বেশি আর এই কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহও তেমন নেই।

জানা যায়, ফরিদপুরে ইলিশ মাছের বড় আড়তদার রয়েছে সাত জন ব্যবসায়ী। তারা হলেন- মনোজ রায়, মজিবুর রহমান, এমএম মুশা, মনিরুল ইসলাম মনা, হারান সরকার, শ্যামল দাস, অজিত সরকার। তাদের হাতেই নির্ভর করে ইলিশের দর কম-বেশ, এমন অভিযোগ ক্রেতাদের।  

তবে ফরিদপুরে ইলিশের আড়তদাররা জানান ভিন্ন কথা। হাজী শরীয়াতুল্লা বাজারের রুপালি ফিসের স্বত্বাধিকারী হারান সরকার বলেন, ইলিশের মৌসুমে গড়ে প্রতিদিন ফরিদপুর সদর উপজেলায় বাজারগুলোতে ১০০ থেকে ১১০ মণ ইলিশ আনা হয়। মৌসুম ব্যতীত এর হার ৪০ থেকে ৬০ মণের মধ্যে বা তারও কিছু কম বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, শুধু ফরিদপুর পৌর এলাকাতেই প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ মণ ইলিশের চাহিদা রয়েছে।

বাজারের অতিরিক্ত দাম বেশির কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যে দামে মাছ ক্রয় করি তাতে ফরিদপুর পর্যন্ত আনার খরচ কেজিতে পড়ে যায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা, তারপর আবার প্রতি কেজিতে বাজারের খাজনা দিতে হয় ৫০ টাকার বেশি। স্বাভাবিকভাবে যে দামে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করি তার থেকে একটু বেশি দামে খুচরা পর্যায়ে বিক্রয় হয়। এছাড়াও নদী বা সাগরের মাছ ধরার ওপর দর অনেকটা নির্ভর করে।  

শহরের শরীয়াতুল্লাহ বাজার, টেপাখেলা বাজার, হেলিপ্যাড মাছ বাজারের গিয়ে দেখা যায়, এ বাজারের বরিশাল, ভোলা বা পটুয়াখালীর ইলিশ এক কেজি সাইজের বিক্রয় হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায়। আর কেজির ওপরে গেলে তার দর ১৯০০ থেকে ২২০০ টাকায়। তবে চট্টগ্রাম কিংবা কক্সবাজারের ইলিশের দর কিছুটা কম। আর কেজিতে চার থেকে পাঁচ সাইজের ইলিশ বিক্রয় হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।

প্রতিটি বাজারেই বিক্রেতারা একই দামে বিক্রি করছে। বাজারগুলোতে সিন্ডিকেটের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।