সিলেট: নগরের বিভিন্ন মার্কেটে ঘটে যাওয়া চুরির ঘটনায় এখনো উল্লেখযোগ্য স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি সিলেট মহানগর পুলিশ। এতে আতঙ্কে আছেন সিলেটের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সিলেট জেলা শাখার সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলেন।
বাজুসের কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং সদস্য নীহার কুমার রায় বলেন, সিলেটে চুরি হওয়া স্বর্ণ দীর্ঘদিনেও উদ্ধার করা হচ্ছে না। মামলা দায়েরের পর দফায় দফায় আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। পুলিশ থেকে শুধু বলা হচ্ছে- তাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চোরদের তারা সনাক্ত করে ফেলেছেন। শিগগির গ্রেপ্তার করতে পারবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এসব ঘটনায় আমরা স্বর্ণ উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক সময় চোর ধরতে পারলেও স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। গত ৯ জানুয়ারির ঘটনায় চোরদের সনাক্ত করা গেছে। কিন্তু তারা বার বার স্থান পরিবর্তন করায় তাদের ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে। আশা করি শিগগির তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। চুরি হওয়া স্বর্ণও উদ্ধার করতে পারবো। স্বর্ণ উদ্ধার ও চোর চক্রকে আইনের আওতায় আনা হবে।
২০১১ সালের দিকে নগরের স্বর্ণা জুয়েলার্সের দেয়াল কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। প্রায় ৪০০ ভরি সোনা চুরি হয়। এ ঘটনায় নগরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ ১৬০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারলেও বাকি অংশ গত ১২ বছরেও উদ্ধার হয়নি। গত ৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকালে সিলেট মহানগরীর আল হামরা শপিং সিটির নুরানি জুয়েলার্স থেকে ২৫০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়। এ ঘটনার পর স্বত্বাধিকারী দেওয়ান মো. জাবেদ চৌধুরী মামলা করলেও কোনো স্বর্ণ উদ্ধার বা চোরকে আটক করতে পারেনি সিলেট মহানগর পুলিশ।
বাজুসের সিলেট জেলা সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান সওদাগর বলেন, সিলেটে অসংখ্য স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিছু স্বর্ণ উদ্ধার করা হলেও অধিকাংশ ঘটনারই পর্যাপ্ত স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারে নাই পুলিশ। এতে আতঙ্কে আছেন সিলেটের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে হলে সরকারের সহযোগিতা দরকার।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নগরে একাধিক স্বর্ণ চুরি ঘটনায় পুলিশের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় আমরা আতঙ্কে আছি। চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমরা পুলিশকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি।
বাজুসের সিলেট শাখার নেতৃবৃন্দ বলেন- মামলা দায়েরের পর দফায় দফায় আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যোগাযোগ রাখছি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও। পুলিশ থেকে শুধু বলা হচ্ছে- তাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। তাই বাধ্য হয়ে আমরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এ সময়ের মধ্যে চুরির ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলে সিলেট চেম্বার ও সব ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
এনইউ/এমজে