ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আট বছরেও শুরু হয়নি সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫
আট বছরেও শুরু হয়নি সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার 

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সমকালের সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার আট বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত বিচার শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমকর্মী ও নিহতের স্বজনরা।  

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) শিমুল হত্যার ৮ম বার্ষিকী উপলক্ষে শাহজাদপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক শিমুল।

পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মর্মান্তিক এ ঘটনার আট বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত মামলার বিচারকাজ শুরু হয়নি। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই হত্যার বিচার দ্রুত শুরু করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানান বক্তারা।  

'শিমুল হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে; খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে' এ স্লোগানকে সামনে রেখে শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এ জাফর লিটনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল সরকারের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন- প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন হোসেন, সাবেক সভাপতি বিমল কুণ্ডু, সাংবাদিক আবুল কাশেম, জহুরুল ইসলাম, জাকারিয়া মাহমুদ, মির্জা হুমায়ুন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুননাহার, ছেলে আল নোমান নাজ্জাশি সাদিক, মেয়ে তামান্না-ই-ফাতিমা, মামা হাজী আব্দুল মজিদ মণ্ডল ও মামাতো ভাই আজাদ মণ্ডল।  

শিমুলের স্ত্রী মামলার বাদী নুরুননাহার বলেন, মামলার সব আসামিই জামিনে বাইরে রয়েছেন। এ কারণে আমরা আতঙ্কে আছি। এখন পর্যন্ত হত্যাকারীদের বিচার শুরু না হওয়ায় আমাদের সবার মন অশান্ত হয়ে আছে। আমরা দ্রুত খুনিদের শাস্তি দেখতে চাই।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র হালিমুল হক মিরু ও ছাত্রলীগ নেতা বিজয় মাহমুদ সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিদ্ধ হয়ে পরদিন মারা যান। এ ঘটনায় শিমুলের স্ত্রী নূরুন্নাহার বাদী হয়ে হালিমুল হক মিরুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০১৮ সালের ২২ জানুয়ারি মামলাটি শাহজাদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং পরবর্তীতে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ শিমুল হত্যা মামলা চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই মামলাটি রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এরপর আসামিপক্ষ হাইকোর্টে রিট করে এটি স্থগিত করে। বাদী নূরুননাহার সুপ্রীমকোর্টের আপিলেড ডিভিশনে লিভ টু আপিল করলে আপিলেড ডিভিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এরপরও ৫ বছর পার হয়, কিন্তু বিচার শুরু হয়নি।  

শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন ও সাবেক সভাপতি বিমল কুণ্ডু বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে শিমুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অথচ আসামিপক্ষের নানা কূটকৌশলের কারণে আজও বিচার শুরু হয়নি। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।  

শিমুল হত্যার ৮ম বার্ষিকী উপলক্ষে কালো পতাকা উত্তোলন, শিমুলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, কালো ব্যচ ধারণ, প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

বাংরাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।