ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অপরাধীদের দেশে ফেরানোর উপায় জানালেন ভলকার তুর্ক

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
অপরাধীদের দেশে ফেরানোর উপায় জানালেন ভলকার তুর্ক জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক

ঢাকা: জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংসতার জন্য দায়ী অপরাধীরা দেশের বাইরে থাকলে তাদের ফেরানোর বিষয়ে সর্বজনীন এখতিয়ার (ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন) প্রয়োগ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ে বাংলাদেশে অভ্যুত্থান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে ভলকার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশের সাবেক সরকার জনতার প্রতিরোধের মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশলের মাধ্যমে নৃশংসতা চালিয়েছিল। সেটা তখনকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব জানত। আর তাদের  নির্দেশেই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো ঘটেছে।

তিনি বলেন, ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে গুরুতর অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনতে পারে কোনো দেশের আদালত। এ ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনের স্থান কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে না। ওই আইনের আওতায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার বা প্রত্যর্পণ চাওয়ার সুযোগ থাকে।

অভ্যুথানের ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা এখন ভারতে অবস্থান করছেন। এ ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে জানতে চাইলে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, যদি অপরাধী দেশের বাইরে থাকে, তখন ‘ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন’ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে যে দেশে অপরাধী অবস্থান করছে তাদের গুরুতর মানবাধিকার লঙঘনের অপরাধের বিচার করতে সম্মত হতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) এ বিষয়ে তদন্তের জন্য বলতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অভ্যুত্থানে নৃশংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের অভ্যন্তরীণ বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আইসিসিতে যাওয়ার বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখা যেতে পারে।

গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ককে গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করার জন্য একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর অনুরোধ করে বাংলাদেশ সরকার।

আগস্টে জাতিসংঘের প্রাক-তদন্ত দল ঢাকা আসে। আর সেপ্টেম্বরে মূল তদন্ত কাজ শুরু হয়। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে। বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এই প্রতিবেদন প্রকাশ করল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।